চান্দিনা

চান্দিনায় সামনের দরজা বন্ধ করে চলছে চায়ের দোকান;সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউই

চান্দিনায় সামনের দরজা বন্ধ করে চলছে চায়ের দোকান;সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউই

 

।।আকিবুল ইসলাম হারেছ।।

 

কুমিল্লার চান্দিনায় শহুরে জনপদ সামাজিক দূরত্ব মেনে নিজ ঘরে থাকলেও ভিন্ন চিত্র গ্রামীণ জনপদে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা নেই উপজেলার গ্রামীণ জনপদে। অন্যসব দিনগুলোর মতোই চলাফেরা, কাজকর্ম, হাটবাজার সবকিছুই হচ্ছে স্বাভাবিক ভাবেই। করোনার কথা জানলেও সচেতনতা নেই  এসব গ্রামীণ অধিবাসীদের।

 

সকাল এবং বিকেলে জনসমাগম হচ্ছে গ্রামের হাটবাজার গুলোতে। উপচে পড়া ভিড়ে গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করছে সবাই।দল বেঁধে চলাফেরা করছে অনেকে।হরহামেশাই এ বাড়ি ও বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন সবাই।বাড়িতে বসে নেই শিশুরাও।দল বেধে খেলাধুলা করছে মাঠে।যত্রতত্র আড্ডায় মেতেছে যুবকেরাও। জনসমাগম হয় এমন কাজকর্মে যোগ দিচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।  এই পরিস্থিতিতে বাড়তি যোগ হয়েছে  ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর ফেরত জনতার স্রোত। হাটবাজার এবং মোড়ের চায়ের দোকানগুলো সামনের দরজা বন্ধ রেখে ভিতরে চালাচ্ছে জমজমাট ব্যবসা।ঠিক রোজার দিনের মতো চুপি চুপি চা নাস্তা সেরে নিচ্ছে মানুষ।একরকম লুকোচুরির মধ্যে চলছে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রামণ ঠেকানোর আচরণ বিধি।অপর দিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজে যাওয়া অসংখ্য লোকজন গ্রামে ফেরত আসায় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে গ্রাম।

 

উপজেলার নবাবপুর বাজারে বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকালে গিয়ে দেখা যায়,গায়ে গা লাগিয়ে চলাফেরা থেকে চলছে কেনা কাটা।একই অবস্থা পাশের মহিচাইল বাজারে। জনসমাগমের কমতি নেই। সামনের দরজা বন্ধ করে চলছে চায়ের দোকান।

 

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকাল এবং বিকেলে এরকম পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশের টহল আসলে সবাই সটকে পড়ে।করোনাভাইরাসের আতঙ্ক এবং সচেতনতা ব্যর্থ এখানে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সব ইউনিয়ন পর্যায়ের হাটবাজরগুলোর একই চিত্র। যদিও প্রশাসন সাপ্তাহিক হাটবাজার বন্ধ ঘোষণা করেনি। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ থাকলেও মানছেন না কেউ। অপ্রয়োজনেও ঘরের বাহির হচ্ছেন অনেকে। চলাফেরা করছেন রাস্তা ঘাটে।

 

এদিকে নিম্ন  আয়ের মানুষের অভিযোগ ঘরে বসে থাকলে তাদের পেট চলা দায়। তাই পেটের দায়ে কাজের সন্ধানে বের হয়েছেন তারা।অপরদিকে গ্রামীণ জনপদে মানুষদের ঘরে ফেরাতে এবং জনসমাগম কমাতে মাঠ পর্যায় মূল ভূমিকা পালন করছে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ।বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকে সেনাসদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদর, চান্দিয়ারা, ছায়কোট, শ্রীমন্তপুর, বরকইট এলাকায় ঘূরে সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে কাজ করতে দেখা গেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশকে। নিয়ম না মানায় বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেন তিনি।

 

এর আগে বুধবার (১ এপ্রিল) রাতে চান্দিনা পৌরসভা, বাড়েরা, মহিচাইল, পরচঙ্গা, মুরাদপুর, অম্বরপুর, শুহিলপুর, পিপুইয়া, বড়ইয়াকৃষ্ণপুর বাজারে ঘুরে নানা অনিয়মের দায়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার  টাকা জরিমানা করা তিনি।এ সময় আড্ডা বন্ধ করে সকলকে ঘরে ফিরতে বাধ্য করেন তিনি।

 

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশ জানান, জনসমাগম রোধে উপজেলা পর্যায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি সদস্যদেরকে নিয়ে যৌথ মোবাইল টিম অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের কথা আমারা জেনেছি।বেশকিছু বিষয় নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিটিং হয়েছে। সেখানে সেনা বাহিনীকে গ্রাম পর্যায় মনিটরিং করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি গ্রামের মানুষও ঘরে থাকবে।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker