চান্দিনা
চান্দিনায় বিয়ের পর প্রেমিকের সঙ্গে পালাল স্কুলছাত্রী, খুঁজে এনে হত্যা করলো মামারা!

চান্দিনায় বিয়ের পর প্রেমিকের সঙ্গে পালাল স্কুলছাত্রী, খুঁজে এনে হত্যা করলো মামারা!
কুমিল্লার চান্দিনায় প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় অভিযোগে ফারজানা আক্তার (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রীকে মামারা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। গত ৭ মে (শুক্রবার) উপজেলার বরকইট গ্রামের হাতগন্ডিপাড় এলাকায় এঘটনা ঘটে। ঘটনাটি চাপা দিতে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করে পরিবারের সদস্যরা। তবে এবিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
নিহত ফারজানা বরকইট উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বাবা আলী হোসেন মারা যাওয়ার পর তার মায়ের সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকত।
জানা যায়, স্থানীয় এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফারজানার। তার ওই সম্পর্কের কথা জেনে গত ৯ এপ্রিল অন্যত্র বিয়ে দেয় মামারা। বিয়ের এক মাস পর (৫ মে) স্বামীর বাড়ি থেকে শাকিল নামে ওই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায় ফারজানা।
খোঁজ নিয়ে পরদিন ওই প্রেমিকের কাছ থেকে ফারজানাকে নিয়ে আসে ফারজানার পরিবার। শাসনের নামে রাতে চলে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন। দুই মামার বেধড়ক মারধরের একপর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফারজানা। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ৭ মে (শুক্রবার) দুপুরে দাফন সম্পন্ন করে পরিবারের সদস্যরা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ফারজানার মৃত্যুর পর তার মুখে ও শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে গ্রাম্য মাতব্বর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হন দুই মামা হানিফ ও হাবিব। গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কেউ একজন আত্মহত্যার বিষয়টি জানালে পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করবে বলে জানান। এরপর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফারজানা স্ট্রোক করে (হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে) মারা গেছে প্রচার করে। পরে দ্রুত লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়।মরদেহ গোসল করানোর কাজে অংশ নেয় হাকমতেরনেছা (হাসু), জেসমিনসহ আরো দুজন। নিহতের শরীরের একাধিক দাগ ছিল বলে নিশ্চিত করে তারা।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘মেয়েটি যেদিন মারা গেছে ওই রাতে তাকে অনেক মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। মেয়েটির ব্যাপারে খবর নিতে গেলে ওই বাড়ির জামাল সরকার আমাকে জানিয়েছেন তারা এলাকার চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে জানিয়েছেন। পরে আমি চলে আসি।’
বরকইট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম বলেন, ‘মেয়েটি মৃত্যুর পর স্থানীয় কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বর ও বাড়ির লোকজন এসে আমাকে জানিয়েছে মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তখন আমি থানার শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেই। কিছুক্ষণ পর শুনি মেয়েটি স্ট্রোক করে মারা গেছে। দু-তিন দিন পর শুনি আবার অন্য কথা।’