জাতীয়
ময়মনসিংহে ৭শত টাকার জন্য দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা

ডিবি’র অভিযানে সাতদিনের মধ্যে মূলহোতা গ্রেফতার ॥ মাথা উদ্ধার
ময়মনসিংহে ৭’শত টাকার জন্য শাহজাহান ওরফে সাজু নামের এক ভ্যান চালককে হত্যাশেষে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ৩ কিলো দুরে লুকিয়ে রাখার সাতদিনের মধ্যে মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘাতকের নাম বাবুল মিয়া। সে মুক্তাগাছা উপজেলার বানিয়াকাজি গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে। ঘাতকের তথ্য মতে পুলিশ নিহতের বিচ্ছিন্ন মাথা হত্যাকান্ডের প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে বানিয়াকাজি গ্রামের কচুরীপানাযুক্ত একটি ডোবা থেকে শনিবার উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়া পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে ঘটনার দায় স্বিকার করেছে। পুলিশ সুুপার শাহ আবিদ হোসেন রবিবার দুপুরে তার কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়ার বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, মুক্তাগাছা উপজেলার গড়বাজাইল গ্রামের ভ্যান চালক শাহজাহান সাজুর সাথে পার্শ্ববর্তী বাবুল মিয়া ৭শত টাকা পাওয়া নিয়ে বিরোধ ছিল। গত ৩০ মার্চ (পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪র্থধাপে ময়মনসিংহে নির্বাচনের দিন) রাতে ভ্যান চালক শাহজাহানকে প্রলোভনে ফেলে নির্জন স্থানে ডেকে নেন বাবুল মিয়া। এ সময় বাবুল মিয়া পাওনা টাকা দাবী করলে শাহজাহান গালি দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ঘুষি মারে। এতে শাহজাহান অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে মৃতভেবে তাকে কাধে করে একই গ্রামের জনৈক তাইজুল ইসলামের ফিসারীর পাড়ে রাখে। পরে শাহজাহানের মৃত্যু নিশ্চিত করতে বাবুল মিয়া তার বাড়ি থেকে বটি দা এনে শাহজাহানের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। লাশের পরিচয় আড়াল করতে বাবুল মিয়া বিচ্ছিন্ন মাথা প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে বানিয়াকাজি গ্রামের একটি ডোবায় কচুরীপানার নীচে লুকিয়ে রাখে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ভ্যান চালককে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবার লাশ সনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মোঃ ইসলাম বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের নামে মুক্তাগাছা থানায় মামলা নং-০১, তাং ০২/০৪/১৯ দায়ের করে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, নির্বাচনের আগের রাতে এ হত্যাকান্ড ঘটায় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার উপর তদন্তভার প্রদান করা হয়। নিহত ভিকটিম কোন মোবাইল ব্যবহার না করায় ডিবি পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দের পরিকল্পনায় নির্দেশনায় ডিবি’র এসআই মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম এনালগ পদ্ধতিতে বিভিন্ন ছদ্ম বেশ ধারণ করে রহস্য উদঘাটনসহ মামলাটি তদন্ত করতে থাকে। তদন্তকালে নানা বিষয় পর্যালোচনাশেষে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়ার উপর নজরধারী শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ৬ এপ্রিল বিকালে বাবুল মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ সুপার আরো জানান, ভিকটিম কোন মোবাইল ব্যবহার না করায় তথ্য প্রযুক্তির ডিবি পুলিশ স¤পূর্ণ এনালগ পদ্ধতিতে তদন্ত করে দ্রুততম সময়ে লুমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূলহোতা বাবুল মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত বাবুল তাৎক্ষনিক পুলিশকে এলোমেলো তথ্য এবং বিভ্রান্ত করার চেষ্ঠা করে। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল মিয়া মাত্র ৭শত টাকার জন্য লোমহর্ষক হত্যাকান্ড ঘটায় বলে স্বীকার করে এবং তার তথ্য মতে ভিকটিমের বিচ্ছিন্ন মাথা ঘটনাস্থল থেকে ৩ কিঃ মিঃ দূরে বানিয়াকাজী গ্রামের একটি কচুরিপানাযুক্ত ডোবা থেকে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করে।
প্রেসব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এ নেওয়াজী, জয়িতা শিল্পী, মোঃ আল আমিন, ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক ফারুক আমহেদ, এসআই আনোয়ার হোসেন, এসআই মনিরুজ্জামানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।





