জাতীয়

ইউ জার্নাল অব পাবলিক হেলথ রিসার্চের তথ্য করোনা সারছে কালিজিরায়, মদিনায় সাফল্য

ইউ জার্নাল অব পাবলিক হেলথ রিসার্চের তথ্য করোনা সারছে কালিজিরায়, মদিনায় সাফল্য

****************************************

করোনাভাইরাসে নাস্তানাবুদ এখন পুরো বিশ্ব। করোনা রোগীদের ওষুধ ও টিকা আবিষ্কারের জন্য হন্যে হয়ে কাজ করছেন গবেষকরা। তবে প্রাকৃতিক দাওয়াইয়ে করোনার চিকিৎসা করা গেলে সেটা যেমন হবে সহজলভ্য, তেমনি খরচও থাকবে হাতের নাগালে। আর প্রাকৃতিকভাবে চিকিৎসা করা গেলে বিশ্ববাসীর কাছে তা পৌঁছে যাবে দ্রুত।

 

সৌদি আরবের মদিনার তাইবাহ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেছেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সফলভাবে চিকিৎসা করেছেন তাঁরা। এ জন্য ব্যবহার করা হয়েছে কালিজিরা, যা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দেখানো চিকিৎসা পদ্ধতি। ওই দলের গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে মার্কিন জার্নাল পাবলিক হেলথ রিসার্চে। মুসলিম ইংক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কালিজিরা হলো সর্বরোগের ওষুধ। তবে বিষ ছাড়া। আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেসা করেছেন, বিষ কী? রাসুল (সা.) বলেছেন, মৃত্যু।

গবেষণাপত্রে উল্লেখ রয়েছে, কালিজিরা ব্যবহারের ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। টিস্যু সুরক্ষিত থাকে, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় না এবং ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কালিজিরা হলো রাসুল (সা.)-এর দেখানো চিকিৎসা উপকরণ। এটা বীজ আকারে কিংবা গুঁড়া করেও খাওয়া যায়। এ ছাড়া খাবারের সঙ্গে কিংবা জুস আকারেও খাওয়া যায়। অনেকেই কালিজিরার তেল খায়।

 

কালিজিরার রয়েছে নানা গুণ। এতে রয়েছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন, লিনোলিক অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফেট, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, নায়াসিন, ভিটামিন-সি, ফসফরাস ও কার্বোহাইড্রেট।

 

গবেষকদের দাবি, কালিজিরা ব্যবহারের ফলে মারাত্মক সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়, ফুসফুসের সমস্যা ধীরে ধীরে সেরে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুস এবং শ্বাসনালি ভালো রাখতে কালিজিরা দারুণ কাজের। যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে, কালিজিরা ব্যবহারে তারাও আরোগ্য লাভ করে। শ্বাসযন্ত্রে যেকোনো ধরনের সংক্রমণ ঠেকাতে কালিজিরা অব্যর্থ ওষুধ। অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দিতেও কালিজিরা কার্যকর। ভাইরাল হেপাটাইটিস সি-তে আক্রান্ত রোগীও কালিজিরা ব্যবহারে উপকার পায়। এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত রোগীদের জন্যও কালিজিরা উপকারী।

করোনা আক্রান্ত রোগীকে সারিয়ে তুলতে গবেষকদের পরামর্শ : দুই গ্রাম কালিজিরা, এক গ্রাম চামেলি ফুল ও এক চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এটা খাওয়ার পর জুস কিংবা একটি কমলা খাওয়া যেতে পারে। লেবু খেতে পারলে ভালো হয়। এভাবে প্রতিদিন একবার করে খেতে হবে। করোনামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই খেতে হবে।

 

গবেষকরা আরো বলছেন, রোগী আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হলে প্রথম সপ্তাহে দিনে পাঁচবার এভাবে খেতে হবে। আর পরে মহামারি শেষ না হওয়া পর্যন্ত দিনে একবার করে খেতে হবে।

 

রোগীর যদি কাশি বেশি হয় এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে কালিজিরা ও লবঙ্গ মেশানো পানি গরম করে ধোঁয়া নাক দিয়ে টেনে নিতে পারে। অথবা কালিজিরা ও চামেলি পানিতে গরম করেও বাষ্প টেনে নিতে পারে।

 

গবেষকরা বলছেন, যদি রোগীর অক্সিজেনের অভাব হয় তাহলে এক চামচ কালিজিরা, এক চামচ চামেলি ও এক কাপ পানি একটি পাত্রে নিয়ে হালকা গরম করতে হবে। এভাবে দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার পানি গরম করে বাষ্প নাক দিয়ে টেনে নিতে হবে।

 

জানা গেছে, সৌদি আরবের তাইবাহ ইউনিভার্সিটির মেডিসিন অনুষদের ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার মেডিসন বিভাগের গবেষকরা এ নিয়ে গবেষণা করেছেন।

 

গবেষকদের একজন ডা. সালেহ মুহাম্মদ বলেন, কালিজিরা ও চামেলি করোনা সংক্রমণ বন্ধ করে দিতে সক্ষম। যেসব করোনা রোগীকে তাইবাহ ইউনিভার্সিটির এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তাদের সবাই আল্লাহর রহমতে সেরে উঠছে। তারা নিজেদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এই পদ্ধতিতে রোগীদের সেরে উঠতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগছে না।

 

সূত্র : মুসলিম ইংক, আমেরিকান জার্নাল অব পাবলিক হেলথ রিসার্চ।

Close