আন্তর্জাতিক

হিমালয়ান ভায়াগ্রা, স্বর্ণের চেয়েও দামি যে ভেষজ

হিমালয়ের ৩ থেকে ৫ হাজার মিটার উচ্চতায় জন্মানো ভেষজ ‘ইয়ারসাগুমবা’। প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এই ছত্রাকটি হিমালয় অঞ্চলের ভায়াগ্রা নামে পরিচিত। সনাতনী চিকিৎসকদের মতে এর মাধ্যমে পুরুষত্বহীনতা, অ্যাজমা এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা হয়।

ইয়ারসাগুমবা স্বর্ণের চেয়েও বেশি দামি। এক কেজির দাম সর্বোচ্চ এক লক্ষ ডলার। নেপাল, ভারত, ভুটান এবং তিব্বতের হিমালয় উপত্যকায় এটি জন্মে। মাটির ফাঙ্গাস যখন পোকামাকড় ধ্বংস করে তখন ইয়ারসাগুমবা জন্মায়।

in_search_of_yarsagumba

মে ও জুন মানে এটি সংগ্রহ করার জন্য পাহাড়ে চলে যায় স্থানীয়রা। তবে এতো উচ্চতায় কাজ করা তাদের জীবনের জন্য হুমকি। সিতা গুরাং নামের এক নারী জানান, ‘এখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। কখনো কখনো বৃষ্টিতে আটকা পড়ি। আবার কখনো তুষার ঝড়ের কবলে পড়তে হয়, যা খুবই ভয়ঙ্কর। অনেক সময় মনে হয় তুষার ঝড় আমাদের উড়িয়ে নেবে।’

viogra 3

গ্রামবাসীর কাছে একেকটি ইয়ারসাগুমবার দাম ৩.৫০ থেকে ৪.৫০ ডলার। এটি আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানি করা হয়। চীন, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কোরিয়া, মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডে এর চাহিদা রয়েছে। বিশ্ব বাজারে এক গ্রাম ইয়ারসাগুমবার দাম ১০০ ডলার।

হিমালয়ের এই ভায়াগ্রার চাহিদা নেপালে যত তারচেয়েও বেশি চীনে। প্রতিবছর প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার ব্যবসা হয় এই ইয়ারসাগুমবা থেকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলন কমে যাচ্ছে। অতিরিক্ত আহরণ ও বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে এটি হচ্ছে। আগে প্রতিদিন একশটির মতো পাওয়া যেত। এখন ২০ থেকে ২৫ টি পাওয়া যায়। কখনো কখনো একেবারেই পাওয়া যায়না। স্থানীয়দের আয়ের ৫৬ শতাংশ আসে ইয়ারসাগুমবা থেকে।

viogra 2

সিতা গুরাং আরও বলেন, এটি বিক্রি করে আমি নতুন কাপড় কিনতে পরেছি। এর থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার খরচ আসে। অর্থের জন্য কারো ওপর নির্ভর করতে হয়না আমাদের।

নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জিত নারাজন শাহ এই ছত্রাক সম্পর্কে বলেন, ‘ইয়ারসাগুমবার বৈজ্ঞানিক নাম ‘অফিওকরডাইসেপস সিনেনসিস’। এই ছত্রাক মানব শরীরের শক্তি বৃদ্ধিসহ রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে। নেপাল এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই ছত্রাকটিকে পুরুষের শুক্রাণু বৃদ্ধির কাজে এবং ঘাড়ের ব্যথা উপশমে ব্যবহৃত হয়।’

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker