জাতীয়শিক্ষাঙ্গন
চান্দিনায় ফলাফলের আধিপত্যে আবেদা-নূর ফাউন্ডেশন

সাদেক হোসেন: কুমিল্লার চান্দিনা সদরের ২২ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে গল্লাই ইউনিয়নে অবস্থিত আবেদা-নূর ফাউন্ডেশন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন উপজেলার কুটুম্বপুর বাস স্টেশন থেকে সিএনজি যোগে যাওয়া যায় এ ফাউন্ডেশনে।১৯৯৫ সালে সাবেক শিক্ষা সচিব মো. ইরশাদুল হক আবেদা-নূর ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষা-দীক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে যে ফাউন্ডেশনটিতে একক আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। পাশাপাশি মসজিদ, মাদ্রাসা ও হাসপতালও রয়েছে এই ফাউন্ডেশন জুড়ে।ফাউন্ডেশনটির আবেদা-নূর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আবেদা-নূর বালক উচ্চ বিদ্যালয়, আবেদা-নূর ফাজিল মাদ্রাসাসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কুমিল্লাসহ দেশের শিক্ষাঙ্গণে মেধাতালিকায় গত শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় বহন করে আসছে। পড়াশুনা, খেলাধূলা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অঙ্গণে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে একক আধিপত্য বিস্তার করে আসছে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।গত ৬ মে চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও দাখিল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। আর এ পরীক্ষার ফলাফলে চান্দিনা উপজেলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে আবেদা-নূর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৭টি জিপিএ-৫সহ শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করে বিদ্যালয়টি। বালিকা বিদ্যালয়টি থেকে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ৫৩ জন ছাত্রী অংশগ্রহণ করে সবাই পাশ করে শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করে। পাশাপাশি উপজেলায় সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ অর্জনকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাপক সফলতা বয়ে আনে আবেদা-নূর ফাউন্ডেশনের অপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদা-নূর বালক উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩২ টি
এক নজরে আবেদা-নূর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গত ৫ বছরের ফলাফল:জিপিএ-৫ পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে বিদ্যালয়টি।২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৫৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৫৭ জনই কৃতকার্য হয়। শতভাগ পাশের হার নিয়ে ওই বছর ৭টি জিপিএ-৫ অর্জন করে বিদ্যালয়টি। ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৫১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৫১ জনই কৃতকার্য হয়। শতভাগ পাশের হার নিয়ে ওই বছর ১৮টি জিপিএ-৫ অর্জন করে বিদ্যালয়টি। ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৪৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৪৮ জনই কৃতকার্য হয়। শতভাগ পাশের হার নিয়ে ওই বছর ৪টি জিপিএ-৫ অর্জন করে বিদ্যালয়টি।২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৬৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৬৪ জনই কৃতকার্য হয়। শতভাগ পাশের হার নিয়ে ওই বছর ১৩টি জিপিএ-৫ অর্জন করে বিদ্যালয়টি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৫৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৫৩ জনই কৃতকার্য হয়। শতভাগ পাশের হার নিয়ে ওই বছর ১৭টি জিপিএ-৫ অর্জন করে উপজেলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে বিদ্যালয়টি।
এছাড়াও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আবেদানূর ফাজিল মাদরাসা থেকে ৪২ জন পরীক্ষা দিয়ে ১৮ টি জিপিএ ৫ সহ শতভাগ পাশ করে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। উপজেলায় পাশের হার ও জিপিএ-৫ এ এগিয়ে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করা ২টি বিদ্যালয় ও ১টি মাদ্রাসা-ই আবেদা নূর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠান।চান্দিনা উপজেলায় আবেদা-নূর ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে পুলিশ, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ অসংখ্য ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়ে কর্মরত আছে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিকতা সফলতা ধরে রাখা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব বলে মনে করেন স্থানীয়রা।আবেদা-নূর প্রাক্তন শিক্ষার্থী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আতাউর রহমান গণি জানান, আবেদা-নূর ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত সকল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে সুনামের সহিত সারা দেশে ফলাফলের দিক দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে আসছে। এ বছরও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ফলাফলে ব্যাপক সফলতা বয়ে এনেছে। উপজেলা পর্যায়ে শতভাগ পাশ ও সবোর্চ্চ জিপিএ-৫ অজর্ন করায় আবেদা-নূর ফাউন্ডেশনের সকল শিক্ষকমন্ডলী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, পরিচালনা কমিটি, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আগামীতে আবেদা-নূর কমপ্লেক্সের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাল ফলাফলসহ বোর্ডে শীর্ষ স্থান ধরে রাখবে।