কুমিল্লা সদরজেলার খবর

কুমিল্লা ধর্মসাগরে কিশোর আড্ডায় পুলিশের হানা

বাঙালি আড্ডায় খোশ গল্পে কতো যে কবিতা উপন্যাস গল্প নাটকের জন্ম দিয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। তবে এখন সেই আড্ডায় কালিমা লেপে দিয়েছে কিছু বখাটে কিশোর তরুণরা।আড্ডা এখন আর অমর সৃষ্টিশীলতার কথা বলে না, বলে কথায় কথায় রক্ত ঝরানোর কথা, প্রতিশোধ নেওয়ার কথা, প্রেমিকার কথায় প্রেমিকের ঘাতক হয়ে উঠার কথা, বন্ধুর পিতাকে জবাই করার কথা। কয়েকটি ছাড়া বাকিগুলোতে মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, কিশোর ও উঠতি বয়সী যুবকদের নিয়ে বড় ভাইদের আড্ডা, স্কুল কলেজগামী ছাত্রীদের ইভটিজিং, রাজনৈতিক গ্রুপিং ও এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি আর খুনের ঘটনার সৃষ্টি হচ্ছে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দোষ আড্ডার নয়, গলদ সামাজিক দায়বদ্ধতায়, পারিবারিক অনুশাসনের বেড়াজাল ছিঁড়ে যাওয়ার প্রবণতায়। বর্তমানে আড্ডাবাজরা এমন বেপরোয়া কিছু ঘটনার জন্ম দিচ্ছে যে, অবিভাবকমণ্ডলী, সমাজ বিশ্লেষকগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলেই শঙ্কিত। অভিযান চলছে একের পর এক। তারপরও বখাটেদের আড্ডা চলতে থাকে স্কুল কলেজ কোচিং সেন্টারের সামনে, কখনো আবার পাড়ায় পাড়ায় গলি উপ–গলিতে। কে শোনে কার কথা?কারণ তারা জানেই যে, তাদের বড়জোর থানা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। সামান্য বকাঝকাও জুটতে পারে কপালে। এর চেয়ে বেশি কিছু আর হবে না। এই অতি মাত্রায় আত্মবিশ্বাস তাদের প্রায়শ বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে তাকে সহ ঘরের অন্যান্য সদস্যদের।সংশিহ্মষ্টদের অভিযোগ, কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর পাড় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। এ ধর্মসাগর পাড় এখন তাদের আড্ডার নিরাপদ আস্তানা। এতে সৌন্দর্য হারাতে বসছে ধর্মসাগর পাড়।গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা টাউন হল ও ধর্মসাগর পাড় প্রতিদিন সকাল ৯টার পর থেকেই ক্লাস ফাঁকি দিয়ে খোশগল্প আর আড্ডায় মেতে উঠে বিভিন্ন স্কুল–কলেজের ইউনিফর্ম পরিহিত শিক্ষার্থীরা।আড্ডায় ব্যস্ত কলেজ শিক্ষার্থী মোঃ ফরহাদ জানায়, কলেজে প্রতিদিন ক্লাস করতে ভালো লাগে না। প্রায়ই বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসি ধর্মসাগর পাড়। এখানে বসার জন্য জায়গা আছে এবং নির্বিঘ্নে খোশগল্পে মেতে উঠা যায়। তাই ছুটে আসি।গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা ধর্মসাগর পাড় পুলিশী অভিযান চলাকালে আড্ডা দিতে আসা রাফির সঙ্গে কথা হয় আজকের কুমিল্লার। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরেই তার কাছে আড্ডা বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। নগরীর একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এ শিক্ষার্থী জানায়, লাইফটা এনজয় করি আসলে।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker