অর্থনীতিজাতীয়শিক্ষাঙ্গন

ভিসি কলিমউল্লাহর দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষকদের অবস্থান

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভিসি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী ভিসিকে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান, দ্রুত প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ, ক্যাম্পাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতিকৃতি স্থাপনসহ ১৮ দফা দাবিতে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়।মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক খাইরুল কবির সুমনসহ সমিতির নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অনুপস্থিতিতে ভিসির বিশেষ সহকারী (পিএস) আমিনুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।১৮ দফা দাবির অন্যান্য দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সিন্ডিকেট সভা, নিয়োগ বোর্ড, অর্থ কমিটির সভাসহ সব সভা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে করা, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজের কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ, নতুন যোগদানকৃত শিক্ষকদের অনিয়মতান্ত্রিক ফাউন্ডেশন ট্রেনিং বন্ধ করে বিভাগের শিক্ষক স্বল্পতার সংকট সমাধানসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সব শিক্ষা ও পেশাগত ট্রেনিং, বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের অধীনে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লিখিত পরীক্ষা নিয়োগ বোর্ডের সব সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা।এছাড়াও অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ইউজিসি থেকে জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক পদ অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ী পদে চাকরিরত শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণসহ নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সেশনজট দূর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণারত শিক্ষকদের স্ববেতনে ৫ বছরসহ মোট শিক্ষাছুটি ৭ বছর নির্ধারণ করে অতিদ্রুত শিক্ষাছুটি নীতিমালা প্রণয়ন করা, অভিজ্ঞতা সনদসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া দুই থেকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করা, সব পরীক্ষার পারিতোষিক ফলাফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ফলপ্রসূ করতে অনুষদে উপস্থিত যোগ্য শিক্ষককে ডিন ও বিভাগে উপস্থিত যোগ্য শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের নিয়োগে অন্যান্য বিভাগের মতো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপনে জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণীত ২৯নং আইনের ২৮ (২) ধারা মোতাবেক নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেট অনুযায়ী বিভাগের একাডেমিক প্ল্যানিং কমিটি গঠন করা, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য ধর্মীয় উপাসনালয় স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের গম্বুজসহ দ্বিতীয় তলার কাজ শুরু করা, বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত শিক্ষকদের পদোন্নতি আটকে রেখে শিক্ষাকার্য স্পৃহাহীনতা সৃষ্টিকারী হয়রানি বন্ধ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকের স্থায়ী শাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট স্থাপন করা।স্মারকলিপির বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির সুমন বলেন, ভিসির দায়িত্বকালের প্রায় অর্ধেক সময় অতিক্রান্ত হতে চললেও বিশ্ববিদ্যালয়ে হতাশা ও নৈরাজ্য কমেনি বরং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অস্থিরতা পরিবেশ বিরাজ করছে যার অন্যতম প্রধান কারণ ভিসির বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি। যার ফলে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় তথা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সম্পর্কে নানাভাবে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য যোগদানকৃত শিক্ষকদের ছুটিবিহীন অনুপস্থিতি শিক্ষা সংকট তৈরি করেছে, প্রশ্নবিদ্ধ শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ অধিকর্তা সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে নীচু হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কপিরাইট যুগান্তর পত্রিকা

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker