শিক্ষাঙ্গন

চান্দিনায় আল-আমিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ

চান্দিনায় আল-আমিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ

।। মাসুমুর রহমান মাসুদ।।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লার চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেইনকে জোর পূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। নেপথ্যে থাকা মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষকের কূট কৌশলে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মাদ্রাসার কতিপয় সাবেক ছাত্র ও বহিরাগত লোকজন তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেন বলে দাবী করেন অধ্যক্ষ জাকির হোসেইন। তারা ওই পদত্যাগপত্রটি লিখে এনে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে জোরপূর্বক অধ্যক্ষের স্বাক্ষর নেন এবং ওই পদত্যাগপত্রটি মাদ্রাসার অফিস যোগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে না পাঠিয়ে বহিরাগতরা নিজেরাই ওই পদত্যাগপত্র শিক্ষা অফিসে জমা দেন।

জানা যায়, ওই মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষকের কারসাজিতে সাবেক ছাত্র ও বহিগরাগতরা রবিবার সকাল থেকে মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল দেয়। এক পর্যায়ে ওই অধ্যক্ষকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়।

এদিকে, বল প্রয়োগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না মর্মে গত ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণায়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নির্দেশনা জারি করার পরও চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদত্যাগ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি ওই পদত্যাগপত্রে ডজনখানে ভুল বানান থাকার বিষয়টি মার্কিং করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে।

ওই মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র ও চান্দিনা জিনিয়াস স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মো. ইলিয়াছ জানান, অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেইন আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাবেক অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে জোর পূর্বক ওই পদ দখল করেন। তিনি ঠিকমতো রিডিংও পড়তে পারেন না। মাদ্রাসার বর্তমান ছাত্ররা অনেকেই অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেইন এর পদত্যাগ করানোর জন্য আমার কাছে আসে তাদের সাথে আমিও একাত্মতা করি। গত ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে অধ্যক্ষকে জোর পূর্বক লাঞ্ছিত করার বিষয়টি বর্তমানে আপনি একজন শিক্ষক হিসেবে কিভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি একজন শিক্ষক হিসেবে বিষয়টি মানতে পারিনা। তবে অধ্যক্ষ জাকির হোসেন এর দুর্নীতি ও অনিয়ম আমি নিজেও মানতে পারিনি।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেইন জানান, তাদের এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মূলত আমাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে একটি চক্র পদত্যাগে বাধ্য করান। রবিবার সকাল ৮টায় আমি মাদ্রাসায় যাই। সকাল ১০টার পর থেকে বহিরাগত অন্তত অর্ধশত লোক মাদ্রাসায় আসে এবং এক এক করে আমার কক্ষে প্রবেশ করে নানা অশালীন আচরণ করে হুমকি ধমকি দিতে শুরু করে। আমি তাদের লিখিত পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর না করায় তারা আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এক পর্যায়ে চাপের মুখে তাদের লিখিত পদত্যাগ পত্রটিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হই। পরবর্তীতে আমি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানাই। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহজালাল জানান, অধ্যক্ষের পদত্যাগ পত্রটি বহিরাগত কয়েকজন লোক এসে আমার কার্যালয়ে পৌঁছায়। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker