অর্থনীতি

হুন্দাই এর গাড়ি কারখানা, স্যামসাং এর মোবাইল। বাংলাদেশের উন্নতির অংশীদার হিসাবে কোরিয়ার গুরুত্ব বাড়ছেই

হুন্দাই এর গাড়ি কারখানা, স্যামসাং এর মোবাইল। বাংলাদেশের উন্নতির অংশীদার হিসাবে কোরিয়ার গুরুত্ব বাড়ছেই

 

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর থেকে বাংলাদেশে কোরিয়ার বিখ্যাত হুন্দাই কোম্পানির সংযোজন কারখানা যাত্রা শুরু করবে। ইতোমধ্যে এদেশে কারখানা করেছে স্যামসাং এবং এলজি। সাম্প্রতিক সময়ে ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইল ও অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশকে ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে দক্ষিণ কোরিয়ার।

 

বিগত কয়েক বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অবকাঠামো খাতের প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে কোরীয় প্রতিষ্ঠান। আলোচনা চলছে আরো প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো প্রকল্পের বিষয়ে।

 

বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ভিন্ন খাতে ধাবিত হয়েছে। এসব খাতের মধ্যে আছে ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইল, মেশিনারি এবং তথ্যপ্রযুক্তি। কয়েক বছর হলো বাংলাদেশে হালনাগাদ মোবাইল উৎপাদন করতে শুরু করেছে স্যামসাং। উৎপাদিত বৈদ্যুতিক পণ্যের মধ্যে আরো আছে রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার এবং ওয়াশিং মেশিন। স্মার্ট টিভি সংযোজন করছে এলজি। আগামী বছর হুন্দাই অটোমোবাইল সংযোজন শুরু করার কথা রয়েছে।

 

ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইল, মেশিনারি এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের নতুন ক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশের অবকাঠামোর বিষয়ে ভাবছেন দক্ষিণ কোরিয়া।

 

কোরীয় বাণিজ্য বিনিয়োগ প্রচারণা সংস্থা কেওটিআরএ বা কটরার তথ্য অনুযায়ী, কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান যুক্ত আছে বাংলাদেশে এমন চলমান প্রকল্প আছে ১৪টি। সাসেক রোড কানেকটিভিটি সুপারভিশনে যুক্ত আছে কুহ্নয়া ইঞ্জিনিয়ারিং। সিলেট এয়ারপোর্ট স্টেনদেনিং প্রকল্পে আছে হাল্লা করপোরেশন। ঢাকা ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্লান্টের সঙ্গে আছে হুন্দাই রোটেম। পদ্মা সেতু সুপারভিশনে আছে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন।

 

আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ে সুপারভিশনে যুক্ত কোরীয় প্রতিষ্ঠানটি হলো দোহওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং, হযরত শাহজালাল এয়ারপোর্ট এক্সপ্যানশন প্রকল্পে আছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি। এদিকে ভান্ডালজুরি ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পে আছে তায়েইয়াং ইঅ্যান্ডসি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পের সঙ্গে আছে কোরিয়ার হুন্দাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।

 

পটুয়াখালী-গোপালগঞ্জ পাওয়ার লাইন প্রকল্পে আছে জিএস ইঅ্যান্ডসি। মেঘনাঘাট পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পে আছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি। কক্সবাজার এয়ারপোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে আছে হাল্লা করপোরেশন। মাতারবাড়ী কোল পাওয়ার প্লান্টে আছে পসকো ইঅ্যান্ডসি। বাকখালী রিভার ব্রিজ প্রকল্পে আছে হাল্লা করপোরেশন। মাতারবাড়ী পাওয়ার প্লান্ট পোর্ট ওয়ার্কস প্রকল্পের সঙ্গে আছে হুন্দাই ইঅ্যান্ডসি।

 

বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার রোড শোতে বাংলাদেশের আটটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ১৭টি কোরীয় প্রতিষ্ঠান আলোচনায় অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও এআইআইবির অর্থায়নে ১ হাজার ১৮৫ কোটি বা প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে কোরিয়ার কোম্পানিগুলো। প্রকল্পগুলোর সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশী সংস্থার মধ্যে আছে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, বাংলাদেশ রেলওয়ে, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অথরিটি ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ইডকল)।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য হয় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ১৬০ কোটি ডলারের কিছু বেশি। দেশের মোট আমদানি ২ দশমিক ৫ শতাংশ বা প্রায় ১৩২ কোটি ডলারের পণ্য আসে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। আবার দেশটিতে বাংলাদেশে তৈরি পণ্য রফতানি হয় ৩০ কোটি ডলারের বেশি। এদিকে বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার পুঞ্জীভূত প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ ১১২ কোটি ডলারের কিছু বেশি।

 

ভিয়েতনামের কথায় ধরা যাক। দেশটি তাদের অবকাঠামো উন্নয়নে গভীর মনোযোগ দেয়। অবকাঠামো সমস্যা দূর করে এবং পরিকল্পিত ইকোনমিক জোন করে ভিয়েতনাম তাদের দেশকেই পরিবর্তন করে ফেলেছে। তাদের দেশে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের অধিকাংশ এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। প্রায় ৪ হাজারের বেশি দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানির বিনিয়োগ আছে দেশটিতে।

স্যামসাং এর মত কোম্পানির বিনিয়োগ হু হু বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের রপ্তানি।

 

বাংলাদেশের দৃশ্যপট পরিবর্তন করতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল যত দ্রুত সম্ভব অবকাঠামো সমস্যা দূর করা। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে বসে আছে তা নয়। জাপান, চীনের মত দেশের সহায়তায় চলমান রয়েছে অনেক গুলি মহাপ্রকল্প। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি বা দুটি উৎসের উপর বেশি নির্ভরশীল হওয়া যেমন ঠিক নয় তেমনি এতে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক প্রকল্পে এই দুই দেশের অর্থায়ন নাও পাওয়া যেতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া হতে পারে আমাদের উত্তম বিকল্প। অবকাঠামো,  ভারি শিল্প কারখানা, আইটি সহ প্রযুক্তিতে বিপ্লবে কোর

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker