তথ্য প্রযুক্তি

রাইফেল হাতে এই কিশোর মুক্তিযুদ্ধার ছবিটা কত জায়গায় কতবার যে দেখেছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই।

রাইফেল হাতে এই কিশোর মুক্তিযুদ্ধার ছবিটা কত জায়গায় কতবার যে দেখেছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে, পোস্টারে, পেস্টুনে কিংবা ক্যালেন্ডারে। যতবারই দেখেছি ততবারই মনে মনে খুব জানতে ইচ্ছে করতো তিনি কি বেঁচে আছেন? নাকি শহীদ হয়েছেন? তবে ফেসবুকের কল্যাণে জানলাম তিনি বেঁচে আছেন। তিনি হলেন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেক(বীর প্রতীক)।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উচ্চ বিদ্যালয় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র ছিল আবু সালেক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বই খাতা পেলে সীমানা পেরিয়ে কিশোরটি চলে গেল ভারতের আগরতলায়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে লোক বাছাই চলছিল। কিন্তু আবু সালেক বয়সে ছোট হওয়াতে ওকে কেউ-ই যুদ্ধে নিতে চাইল না। বাছাইয়ে না টিকে কান্নায় ভেঙে পড়ল ছেলেটি। ওর কান্না দেখে বাধ্য হয়ে ওকে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিত হল দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের। আগরতলা থেকে আবু সালেক নিয়ে যাওয়া হলো মেলাগড় ক্যাম্পে। তারপর বড় যোদ্ধাদের সঙ্গে কিশোর আবু সালেক শুরু করল দেশকে স্বাধীন করার যুদ্ধ। এমনি একদিন ওরা ভীষণ যুদ্ধ করছিল চন্দ্রপুর গ্রামে। আবু সালেক সেই যুদ্ধে ছিল বাংকারে। প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। মুক্তিবাহিনীর একপর্যায়ে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াল। এখন ওদের সামনে একটাই রাস্তা, পিছু হটতে হবে। আর পিছু হটতে হলে একজনকে তো ব্যাকআপ দিতে হবে। নইলে যে সবাই মারা পড়বে। এগিয়ে এলো সবার ছোট কিশোর আবু সালেক। ছোট্ট কাঁধে তুলে নিল বিশাল এক দায়িত্ব। ক্রমাগত গুলি করতে লাগল পাকবাহিনীর ক্যাম্প লক্ষ্য করে। আর সেই অবসরে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেল অন্যরা। ও কিন্তু গুলি করা থামাল না । তার গুলির ধরন দেখে পাকবাহিনী মনে করল, মুক্তিযোদ্ধারা খুব সংগঠিতভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। ফলে ওরাও পিছু হটে গেল। বাংকারে থেকে গেল শুধু আবু সালেক। একসময় রাত শেষ হয়ে সকাল হয়ে গেল। মুক্তিযোদ্ধারা ভেবেছিল আবু সালেক নিশ্চয়ই শহীদ হয়েছে। কিন্তু বাংকারে গিয়ে সবাই দেখল কিশোর আবু সালেক একা বাংকারে বসে আছে।

 

তথ্য সূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker