তথ্য প্রযুক্তি

বরুড়ায় তালের ডাবের বাম্পার ফলন

বরুড়ায় তালের ডাবের বাম্পার ফলন

এমদাদুল হক সোহাগ: বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন ও আশপাশের এলাকায় তালের ডাবের বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব তালের ডাব স্বাদ ও মানে অনন্য। ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত ও গরমে শরীর প্রশান্ত করতে তালের ডাবের জুরি নেই। চট্টগ্রাম নগরবাসীর হৃদয় তৃপ্ত করতে এই তালের ডাবের কদর অনেক বেশি। প্রতিবছরই এই সময়ে তালের ডাব স্থানীয় পাইকারেরা চট্টগ্রাম নিয়ে পাইকারী দরে বিক্রি করেন। পরে সেগুলো নগরীর বিভিন্ন অলিতে গলিতে ছড়িয়ে পড়ে।

সারাদেশে যে তালের ডাব উৎপাদিত হয়, তার মধ্যে কুমিল্লা অন্যতম। লালমাই পাহার ও তার পাদদেশ বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন সহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে তালের গাছ থেকে প্রচুর তালের ডাব পাওয়া যায়। স্থানীয় পাইকারেরা গাছে ডাব ছোট থাকাবস্থায়ই গাছ চুক্তি কিনে নেন। পরবর্তীতে এগুলো পাহারা দিয়ে ফল রসালো হলে গাছ থেকে কেটে নামিয়ে ট্রাকে করে চট্টগ্রামের ফিশারিঘাটের আড়তে বিক্রি করে থাকেন।

রুহুল আমীন নামের এক পাইকার বলেন, তিনি এবছর প্রায় লাখ দেড়েখ তালের ডাব কিনেছেন। সব ডাব চট্টগ্রামের ফিশারিঘাট আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন। একটি বড় ট্রাকে প্রায় ৩০ হাজার ডাব ধরে। ফিশারিঘাটে নিয়ে ট্রাক চুক্তি বিক্রি করে ফেলেন। তিনি আরো জানান, এক ট্রাক তালের ডাব চট্টগ্রাম নিয়ে ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারেন। দাম একেক সময় একেক রকম থাকে।

গাছ মালিকদের কাছ থেকে এক ট্রাক তালের ডাব কিনতে তাঁর ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। রাস্তায় পুলিশ, আড়তদার ও গাড়ীভাড়া বাবদ ১০ হাজার টাকার মতো চলে যায়। তারপর লাভ থাকে। এদিকে, কুমিল্লা শহর সহ বিভন্ন এলাকায় একটি তালের ডাব সর্বনিম্ন ১০, ১৫ থেকে ২০ টাকায়ও বিক্রি হয়। সে তুলনায় গাছ মালিকেরা তালের ডাবের যে মূল্য পেয়ে থাকেন তা খুবই সামান্য।

বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি বড়হাঙ্গিনা ভূইয়া বাড়ির তানিম ভূইয়া বলেন, তাদের ছয়টি গাছের তালের ডাব মাত্র দুই হাজার টাকায় স্থানীয় এক পাইকারের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রতিটি গাছে পাঁচশ ডাবের বেশি হবে।

ওই এলাকার তাজুল ইসলাম নামের আরেক পাইকার জানান, তালগাছ কিনে সেগুলো পাহারা দিতে হয়। একটি গাছ থেকে ডাব নামাতে গাছিকে একশ পচিঁশ টাকা দিতে হয়। তাছাড়া, শ্রমিকদেরও মজুরী দিতে হয়। সর্বশেষ আড়তে নেয়া পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। তারপর লাভ। তবে, এ এলাকার ডাব অনেক স্বাদ। চট্টগ্রামে এই ডাবের ভালো চাহিদা।

জানা যায়, বরুড়ার বাতাইছড়ি এলাকায় এরকম চার পাঁচজন পাইকার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে তালের ডাব সংগ্রহ করে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে বিক্রি করে থাকেন।

বরুড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল আলতাফ বলেন, ভবানীপুর ইউনিয়ন এলাকায় প্রচুর তালগাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে প্রতিবছরই প্রচুর তালের ডাব পাওয়া যায়। এসব তালের ডাব স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামে নিয়ে পাইকারেরা বিক্রি করে থাকেন। তবে পাইকারদের সিন্ডিকেটের কারণে গাছের মালিকেরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker