চান্দিনা

চান্দিনায় করোনা আক্রান্ত সহ সব ধরনের রোগীদের সেবা দিচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স;

চান্দিনায় করোনা আক্রান্ত সহ সব ধরনের রোগীদের সেবা দিচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স;খোলা হয়েছে ফ্লু-কর্নার সুস্থ হয়েছেন ৪ করোনা রোগী

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী সহ সব ধরনের রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চলমান মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর আতঙ্কে বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে উৎকণ্ঠা থাকলেও চান্দিনায় এই চিত্র নেই। সরকারি সাধারণ ছুটিতে উপজেলার অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এতে অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছে উপজেলাবাসী।

 

৫০ শয্যা বিশিষ্ট চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আন্তঃ বিভাগ, বর্হিঃ বিভাগ ও জরুরী বিভাগসহ সবকয়টি বিভাগই চালু রয়েছে। এছাড়া চলমান করোনা পরিস্থিতিতে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য পৃথক একটি ফ্লু-কর্নার খোলা হয়েছে। কুমিল্লা জেলায় এই ফ্লু-কর্নারটি ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ। সেখানে প্রতিদিন তিনজন ডাক্তার ফ্লু উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

 

শনিবার (৯ মে) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ দিনে ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন মোট ৮শত ২৯ জন রোগী। এদের মধ্যে আন্তঃ বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ১শত ১৫ জন। জরুরী বিভাগে সেবা চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ৪শত ৪৬ জন রোগী এবং বর্হিঃ বিভাগে ২শত ৬৮জন রোগী।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানাযায়, চান্দিনা উপজেলায় ১১ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে ১জন রোগী মারা যান। এরপর পাশর্^বর্তী দেবিদ্বার ও চান্দিনা উপজেলাকে ’রেড জোন’ ঘোষণা করেন কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। রেড জোন ঘোষণা করার পর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। আন্তঃ বিভাগ, বর্হিঃ বিভাগ ও জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশাপাশি করোনা রোগীদের সেবাও দিতে হয়। এছাড়া নতুন করে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়া ব্যক্তিদের নমুনাও সংগ্রহ করতে হয়।

 

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. গাজী মাহমুদুল হাসান জানান, মোট ১১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর আমরা তাদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা ও খোঁজ খবর নিয়ে যাচ্ছি। হোম আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীদের আমরা একদিন পরপর বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদেরও আমরা সেবা দিচ্ছি।

 

তিনি আরও জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ৪ জন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের পরবর্তী দুইবারের সেম্পলেই করোনা নেগেটিভ এসেছে। করোনা রোগীদের পাশাপাশি আমরা সাধারণ রোগীদেরও সেবা অব্যাহত রেখেছি।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়া ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পৃথক তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। টিম তিনটির নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গাজী মাহমুদুল হাসান এবং উপজেলা করোনা ফোকাল মেডিকেল অফিসার ডা. শিমুল রঞ্জন দে। টিম সমূহে অংশগ্রহণ করেন স্বাস্থ্য কম্পপ্লেক্সের স্টোরকিপার লিটন সাহেব, ল্যাব টেকনিশিয়ান ফেরদৌসী, ইউনুস, জহির, নাজমুল এবং ইউসুফ।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক মিলু জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশাপাশি আমরা সব ধরনের রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে ঠান্ডা, কাশি, জ¦র, শ^াসকষ্ট, ডায়রিয়া, শিশু রোগ ইত্যাদি রোগীর সংখ্যাই বেশি। তাদের সেবা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া গর্ভবতী মায়েদের সেবাও দেওয়া হচ্ছে।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এই প্রধান আরোও বলেন- ’রেড জোন’ এড়াতে চান্দিনাবাসীকে আরও কিছুদিন ঘরে থাকতে হবে। তাহলেই করোনা সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে। তিনি চান্দিনাবাসীকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker