জাতীয়শিক্ষাঙ্গন
আমিতো পুলিশ!!!একজন মানুষ ও,মোঃ দেলোয়ার হোসেন (শোভন) এ এস আই / নিঃ

আমিতো পুলিশ!!!একজন মানুষ ও,
কিন্তুু আমার মাঝে নেই কোন সকাল-বিকাল, দিন-রাত্রি, গ্ৰীষ্ম- বর্ষা, ঠান্ডা গরম এমনকি কোন মহামারী ভাইরাসের পার্থক্যটাও। বর্তমান বিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারি ও আমার জন্য সমান।
হয়তো মনে হচ্ছে অবাক করা কথা বললাম, হয়তো না– যে, কোন বন্ধে বা উৎসবের দিনে যখন সবাই অবসরে আনন্দে ব্যস্ত এমন কি আজ যখন সবাই করোনা ভাইরাস মহামারিতে আতংকিত তখন আমার বাড়ে ব্যস্থতা।
সময়ের মাঝে নেই কোন মিল! কখন যায় কখন আসে! সকালে বের হলে কখন বাসায় যাবো তার কোন নেই ঠিক। রাতে গেলে কখন ফিরে যাব থানায় তাও ঠিক বলতে পারি না কারন আমার ডিউটির শুরু আছে শেষ বলে শব্দটা অনেকটা শংকিত! ক্লান্ত শরীরে ঘুমোতে গেলে গভীর ঘুমে এবং কি গভীর রাতে বেজে উঠে মোবাইল ফোন। এ সমস্যা ঘটেছে, ঐ সমস্যা হয়েছে সবার সমস্যার জন্য প্রয়োজন আমার কারণ কেউ বুঝতে চায়না এখন আমার ও ঘুমের সময়! কারন সবাই জানে আমিতো পুলিশ! আমার আবার কিসের ঘুম? সবাইর ঘুমের প্রয়োজন থাকলেও আমারটার দরকার কি। আমারটা নিয়ে তো কারো কিছু যায় আসে না। কারন সবার প্রয়োজনে আমি, আমারটা ভাবার কি কেউ আছে??? এমনতাবস্থায় যখন তখন মোবাইল ফোনের যন্ত্রণায় প্রথম প্রথম স্ত্রীর মন খারাপ বা চেঁচামেচি থাকলেও এখন অনেক ধৈর্য বেড়ে গেছে কারন আমি পুলিশ তাই কিছু বলতে চাইলে ও বলতে পারে না।
এখন করোনা ভাইরাস নিয়ে সারা বিশ্বে যখন আতঙ্কিত, সবাই যখন ঘরমুখি, বিভিন্ন এলাকা লকডাউন, কেউ কেউ কোয়ারেন্টাইনে, এবং বলে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি থেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে, সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কুচিং সেন্টার সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও বিভিন্ন কলেজে হোষ্টেলে থাকা ছাত্র- ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওয়াজ মাহফিল, তীর্থযাত্রা জনগনের স্বার্থে বন্ধ করা হয়েছে, সবাইকে যখন মহামারি করোনা ভাইরাসে মাস্ক সহ জনসমাগম পরিহার সহ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য বারংবার নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।
ঠিক তখনই আমার ছুটি বন্ধ, আমি এখন রাজপথে সচেতনতামূলক প্রচারণায় ব্যস্ত, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খবর নিচ্ছি কোন প্রবাসী হোম কোয়ারান্টাইনের বাইরে আছে কিনা, সবার কাছে সশরীরে পৌছানো সম্ভব না হলেও সবাইর মোবাইল নাম্ভার সংগ্রহ করে সবাইকে হোমকোয়ারান্টাইনে থাকার জন্য তিনি সহ তার পরিবার পরিজনকে ও আশে পাশের মানুষকে মহামারী করোনা ভাইরাস হতে হেফাজতে থাকার জন্য সচেতনতা করে চলছি। বারবার মা, বাবা, স্ত্রী, বাচ্চার ফোন বুঝাতে হচ্ছে আমি সুস্থ আছি অনেক নিরাপদে আছি, শান্তিতে আছি, কোন চিন্তা করবানা । অথচ আমার হাত ধোয়ার সময় নেই, মুখে মাক্স পড়ার সময়টুকু নেই। জনসমাগম এড়ানোর কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ, জিডি, মামলা তদন্ত, বিভিন্ন কাগজ পত্রের যথাসময়ে জবাব প্রেরন, নিয়মিত ডিউটি কোন কিছুই থেমে নেই।
আসলে আমি সবই পারি কারণ আমিতো পুলিশ!
এসব আমার দুঃখের কথা না প্রতিদিনের বাস্তবতা।
তবু ও আমি অপ্রতিরোধ্য হয়ে জনগণ তথা দেশের হয়ে লড়তে চাই। যত বড়ই মহামারী বিপর্যয় আসুক না কেন আল্লাহর রহমতে সব সময় জনগণের পাশে থাকতে চাই। ক্ষনিকের জীবনটা দেশের জন্য উৎসর্গ করতে চাই।
জীবনকে ভালবাসি সত্য কিন্তু নিজ মাতৃভুমি দেশের চেয়ে বেশি নয়!!!!
মোঃ দেলোয়ার হোসেন (শোভন)
এ এস আই / নিঃ
বাংলাদেশ পুলিশ