জাতীয়

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া খুশিও ফিরলেন মায়ের কোলে।

সাত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া খুশিও ফিরলেন মায়ের কোলে।

 

তখন খুশি মাত্র ১১ বছরের বালিকা।

 

দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার গুচ্ছগ্রাম পাকেরহাট গ্রামের আজিজার রহমানের মেয়ে খুশি। গরিব পিতার পক্ষে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন ছিলো। দুবেলা খাবারের অন্বেষণে ২০১২ সালে রাজধানীর গুলশানের নিকেতনে একটি বাসায় কাজ করতে পাঠানো হয় খুশিকে।

 

নিকেতনের যে বাসায় খুশি কাজ করতেন, সে বাসার মালিক মাসুদুজ্জামান সরকারের বাড়িও দিনাজপুরের একই থানা এলাকায়। মাসুদুজ্জামানের অনুরোধেই খুশির বাবা তাকে বাসায় কাজ করতে পাঠান।

 

খুশি টানা এক বছর মাসুদুজ্জামানের বাসায় কাজ করেন। এরপর ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কাউকে  কিছু  না বলে বাসা থেকে কোথায় যেন চলে যান।

 

এ বিষয়ে ২০১৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল। খুশির নিয়োগকারী মাসুদুজ্জামান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিংসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। কিন্তু কোন হদিস মিলেনি খুশি আরার।

 

মেয়ের সন্ধান না পেয়ে ষড়যন্ত্র তত্বের আশ্রয় নিলেন খুশির বাবা। তার ধারনা বদ্ধমূল হলো তার মেয়ের নিরুদ্দেশ হওয়ার পেছনে নিয়োগকারীর হাত রয়েছে। মেয়ের সন্ধান না পাওয়ায় খুশির বাবা মাসুদুজ্জামানসহ তাঁর পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দিনাজপুর জেলার বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত খানসামা থানাকে নিয়মিত মামলা রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি খানসামা থানা পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত করেন পিবিআই ও সিআইডি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।

 

কিন্তু ধর্মের কল বাতাসে নড়ে!

 

গত ৩০ জুন, ২০২০ গুলশান থানা পুলিশ বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারে খুশি বনানী থানাধীন কড়াইল বস্তিতে বসবাস করছেন। সংবাদ পেয়ে গুলশান থানা পুলিশ বনানী থানাধীন কড়াইল বস্তির বউ বাজারের একটি বাসা হতে খুশিকে উদ্ধার করে নিরাপদ হেফাজতে নেন। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাবিরুল ইসলাম খুশিকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপনের জন্য গুলশান থানা থেকে নিজ হেফাজতে নিয়ে আসেন।

 

গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান পিপিএম জানান, খুশি আরাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন সে বাসা থেকে হঠাৎ বের হয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। পথ খুঁজে না পেয়ে সে হাটতে হাটতে গুলশান থানাধীন গুদারাঘাট এলাকায় রাস্তার পাশে গাছের নিচে বসে কান্না করছিলেন। গুলশান ১ এলাকায় অবস্থিত ডিসিসি মার্কেটের ক্লিনার মনোয়ারা বেগম তাকে কাঁদতে দেখে তার নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন। খুশি তার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে না পারায় মনোয়ারা বেগম কড়াইল বস্তিতে তার বাসায় নিয়ে যান এবং তিনিই খুশি আক্তারকে দীর্ঘ সাত বছর লালন পালন করেন।

 

আমাদের হারিয়ে যাওয়া খুশিরা খুঁজে পাক নিজ নিজ ঠিকানা। খুশিদের জীবন হয়ে উঠুক হাসি আনন্দে ভরা খুশীময়! ধন্যবাদ গুলশান থানা পুলিশকে।

 

ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশ আপনাদের সাথেই আছেন।

 

সংবাদসূত্রঃ ডিএমপি নিউজ

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker