খেলাধুলা
আবারও বদলাতে পারে বিশ্বকাপের সূচি!
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরু হতে বাকি আর মাত্র দুই সপ্তাহ। অথচ এখনও সূচি নিয়ে বিতর্ক থামছে না। ভিন্ন ভিন্ন কারণে দুই রাজ্যের ৯টি ম্যাচের সূচি একবার বদলানোর পর এখন আবার হায়দরাবাদ থেকে এসেছে প্রস্তুতি ম্যাচের তারিখ বদলানোর অনুরোধ। শুরুতে বিসিসিআই থেকে সেই অনুরোধ তোয়াক্কা করা না হলেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজ্য পুলিশ।

ওয়ানডে বিশ্বকাপ আইসিসির সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং আর্থিকভাবে সবচেয়ে সফল টুর্নামেন্ট। কিন্তু ভারতের এবারের আসর পরিণত হয়েছে রীতিমতো এক তামাশায়। সাধারণভাবে বিশ্ব আসর মাঠে গড়ানোর অন্তত এক বছর আগে তার সূচি প্রকাশ করে স্বাগতিক ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু এবার ১০০ দিন আগেও সূচি প্রকাশ করা হয়নি।
বারবার তাড়া দেয়া সত্ত্বেও সূচি চূড়ান্ত করতে বিসিসিআইয়ের বিলম্ব বিতর্কিত করেছে আইসিসিকেও। পরে অবশ্য মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে সূচি প্রকাশের অনুষ্ঠান আয়োজন করে তারা। আরেক শহরে উন্মোচন করে টুর্নামেন্ট মাসকটের। ধরে নেয়া হয়েছিল, শঙ্কার মেঘ কেটেছে বিশ্বকাপ নিয়ে।
কিন্তু কিছুদিন না যেতেই শুরু হয় নতুন নাটক। ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য থেকে সূচি বদলানোর অনুরোধ আসতে থাকে বিসিসিআইয়ের কাছে। এটা করলে নাকি নিরাপত্তা দিতে পারবেন না তারা! এমনকি ভারত-পাকিস্তানের মতো হাইভোল্টেজ ম্যাচ নিয়েও আপত্তি জানায় আহমেদাবাদ। একই রকম অনুরোধ আসে কলকাতা থেকেও। জানানো হয়, নবরাত্রি এবং দীপাবলির সঙ্গে ম্যাচের সূচি সাংঘর্ষিক হওয়ায় বদলাতে হবে ম্যাচের সূচি।
জটিলতা সামাল দিতে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধানে আসতে পারেনি বিসিসিআই। বাধ্য হয়ে বদলানো হয় বিশ্বকাপের সূচি। নয়টি ম্যাচের তারিখ এবং সময় বদলায় আইসিসি, যেখানে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডকে। এই তিন দলের তিনটি করে ম্যাচের সূচি বদলে নতুন করে ঘোষণা করা হয় বিশ্বকাপের ফিকশ্চার। শুরু হয় টিকিট বিক্রি, হুমড়ি খেয়ে তা কিনতে শুরু করেছেন সমর্থকরা। অনেক ম্যাচে টিকিটের চাহিদা বাড়তে থাকায়, নতুন করে টিকিট ছাড়ারও দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
কিন্তু নতুন খবর হচ্ছে, এখন আবারও বদলে যেতে পারে সূচি। কারণ, ৯ আগস্টের একটা ম্যাচ হায়দরাবাদ থেকে আগে একবার বদলানোর কথা বলা হলেও সেটাকে পাত্তা দেয়নি ভারতের ক্রিকেট কর্তারা। কিন্তু এবার একই রাজ্য থেকে প্রস্তুতি ম্যাচের তারিখ বদলানোর অনুরোধ এসেছে। আর যে ম্যাচগুলোর জন্য এই আপত্তি তার সব কটিই পাকিস্তানের ম্যাচ বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম।
রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে ২৯ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে ব্যস্ত থাকবে রাজ্যের সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর আবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গণেশ বিসর্জন অনুষ্ঠান। টানা দুদিন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কর্তব্য পালনের পর ২৯ তারিখ ম্যাচের নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানিয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশ। একই কারণে ৯ আগস্টের ম্যাচেও নিরাপত্তা দিতে আপত্তি ছিল তাদের।
ভারতের বিশ্বকাপ নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি ম্যাচের জন্য তিন হাজার পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব পালন করার কথা রয়েছে। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক সদস্যকে টানা ৪-৫ দিন ২৪ ঘণ্টার জন্য পাওয়া কঠিন হবে বলে জানিয়েছে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। তবে তাদের এই অনুরোধে এখন পর্যন্ত কোনো পাত্তা দিচ্ছে না বিসিসিআই।