লাইফস্টাইল

বিমান বন্দরে নামানোর পর পর আমাকে অনেক যত্ন করে এসি নিয়ন্তিত এক মাইক্রোবাসে করে গ্রামে আনা হলো।

একটানা ৭ বছর বিদেশে থেকে,আজকেই দেশে ফিরে আসলাম।বিমান বন্দরে নামানোর পর পর আমাকে অনেক যত্ন করে এসি নিয়ন্তিত এক মাইক্রোবাসে
করে গ্রামে আনা হলো।

সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা।আগে থেকেই ভাই-বোন,
বাবা-মা সহ গ্রামের অনেকেই আমাকে দেখার জন্য বাড়িতে বসে আছেন।এলাকার মাওলানা সাহেবও এসে গেছেন।শুধু একজনের আসার বাকি,তার জন্যই সবাই অপেক্ষা করে বসে আছে।

বাহ! কয়েক বছর আগে,বেকার বলে আমাকে পরিত্যাগ করা মেয়েটাও আজ দেখি আমাকে দেখতে আসছে।তার সাথে একটা কন্যা সন্তানও আছে দেখছি।মাশাল্লাহ একদম অর মত দেখতে।টানা টানা চোখ,তবে মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আছে,মনে হয় ভয় পেয়ে এমন হয়েছে।

চারদিকে হৈহল্লা অবস্থা।তবে একটা জিনিস খেয়াল করলাম,সবাই আমাকে নয় আমার সাথে আসা বড় বাক্সটাকে নিয়েই বেশি আগ্রহী।

ছোট ভাইটা মনে মনে ভাবছে,যাক এবার ভাইয়ার সাথে আসা বক্সের মধ্যে থাকা টাকাগুলা থেকে কিছু টাকা দিয়ে ভাল ব্যাবসা শুরু করা যাবে।

আমার কষ্টের টাকা দিয়ে বিয়ে দেয়া বিবাহিত বোনটা ভাবছে,কি ভাবে আমার সাথে আসা টাকা গুলা থেকে কিছু টাকা দিয়ে স্বামীকে বিদেশ পাটাতে পারবে।

আর বাবা ভাবছে,ছেলেটা সারাটা জীবন পরিবারের শান্তির জন্য কষ্ট করে গেলো।কিন্তু ঠিক মত পরিবারটা গুছাতে পারলো না।কিছুই হলো না ছেলেটাকে দিয়ে।কি অভাগা এক ছেলে।

আর ঘরের একটা কোনায় বসে মা ভাবছে,কেউ খুলছে না কেনো এখনো কফিন বক্সের ঢাকনাটা।কেউ দেখায় না কেনো তাকে, আমার থেথলে যাওয়া চেহারাটা।

আর আমি নিজেকে নিজেই মরা হাতির মত ভাবছি।
মরার পর নাকি হাতির মূল্য লক্ষ টাকা।সবার কাছে এখন আমার ও দেখছি তেমনি অবস্থা,কখনো কোথাও মূল্য পাই নাই।যখন বিদেশে ছিলাম তখন আমার নাম ছিলো কামলা। নিজের দেশের মানুষ ও সম্মান দিতো না।

আজ পরিবার ও দিলো না।যাক এখন আমি সব চাহিদা কিংবা দায়িত্বের বোঝা থেকে হাজার যোজন দূরে। এখন শুধু ঘুম হবে খুব শান্তির ঘুম ।…copy

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker