চান্দিনা

চান্দিনার সাহাপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলছে পুকুর ভরাট

চান্দিনার সাহাপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলছে পুকুর ভরাট

মো. আবদুল বাতেন,পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুর ও জলাশয়ের বিকল্প নেই। আর কুমিল্লার চান্দিনায় অবাধে ভরাট হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব পুকুর। ইতিমধ্যে শুধুমাত্র উপজেলা সদরেই ৩টি পুকুর ভরাট হয়েছে। দুইটি পুকুর সম্পূর্ণ ভাবে ভরাট করার পর এবার ভরাট করা হচ্ছে সাহাপাড়া এলাকার বিশাল আরও একটি পুকুর।

রবিবার (২৬ জুলাই) নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এই পুকুরটি ভরাট করা হলে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। দুর্ভোগে পড়বে অন্তত অর্ধশত পরিবার।

সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কোন ধরনের শ্রেণি পরিবর্তন ছাড়াই পুকুরটি চুক্তিতে ভরাট করছে স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- চান্দিনা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন একটি ব্যক্তি মালিকাধীন পুকুর গত বছরের ভরাট করা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে মধ্যবাজারের চৌধুরী মার্কেট সংলগ্ন একটি পুকুর ভরাট করে দোকান ভিট গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমান বর্ষা মৌসুমে চৌধুরী মার্কেট এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বহু দোকানের ভিতরে পানি জমে ব্যবসায়ীদের অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ওই ২টি পুকুর ভরাট নিয়ে একাধিকবার অবগত করলেও কার্যত কোন ভূমিকা না রাখায় অবাধে ভরাট হয়েছে পুকুরগুলো।

 

বর্তমানে সাহাপাড়া এলাকার প্রায় ৭২ শতাংশের পুকুরটি ভরাট কাজ চলছে। সাহাপাড়া সংলগ্ন ঈদগাহ এলাকায় ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে বালু দিয়ে ভরাট চলছে পুকুরটি। প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ ভরাট কাজ চলেও যেন দেখার কেউ নেই!

সরেজমিনে পুকুর ভরাটে ছবি তুলতে গেলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। একাধিক সূত্রে জানা যায়- পুকুরে মালিকপক্ষ থেকে তারা ৩২ লাখ টাকায় ভরাটের চুক্তি নেয়।

পুকুরের এক মালিক পক্ষ রানা সাহা জানান- আমি একা নই, সকলে মিলেই পুকুরটি ভরাট করছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে মালিকপক্ষের একজন জানান- আমরা হিন্দু মানুষ। এতো ঝামেলা নিতে পারবো না বিধায় তারা (স্থানীয় প্রভাবশালী মহল) সব ঝামেলা দেখবে বলে ৩২ লাখ টাকায় চুক্তি নিয়ে ভরাট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ভরাট কাজের সাথে যুক্ত থাকা আব্দুল আজিজ ভূইয়া সাংবাদিকদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন- ‘আপনারা কি উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়র থেকে বেশি আইন জানেন নাকি? তাদের সাথে আলোচনা করেই আমরা কাজ করছি’।

পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জাফর উল্লাহ আজাদ জানান- পুকুর ভরাটের বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। আমি স্থানীয় সূত্রে ও সাংবাদিকের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, মালিক পক্ষ থেকে স্থানীয় একটি মহল ভরাটের জন্য চুক্তি নেয়। যা মোটেও আইন সঙ্গত নয়। বিষয়টি নিয়ে আমি পৌর পরিষদে আলোচনা ও করেছি।

পৌর মেয়র মো. মফিজুল ইসলাম জানান- পুকুর ভরাট আইনত অপরাধ। সাহাপাড়ার পুকুর ভরাটের বিষয়ে কেউ আমার কাছে আসেনি। বিষয়টি আমি তদন্ত করে পৌর আইনে যথাযথ ব্যবস্থা করবো।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নেহাশীষ দাশ জানান- বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker