জেলার খবর

যমুনা ক্লাসিক পরিবহনের চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

যমুনা ক্লাসিক পরিবহনের চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

বিশেষ প্রতিনিধি : নোয়াখালীর চৌমুহনী-ফেনী-লক্ষীপুর রুটে চলাচলকারী যমুনা ক্ল্যাসিক লিমিডেটের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান মানিক এর বিরুদ্ধে কোম্পানীর প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। পাওনা টাকা চাওয়ায় উল্টো মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে অপপ্রচার, হয়রানি ও পরিবহন বন্ধ রাখারও অভিযোগ করেছেন পরিচালকরা। এ নিয়ে পরিবহনটির চেয়ারম্যান, এমডির বিরুদ্ধে পরিচালকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ১০ জন পরিচালক মিলে বিগত ২০১৫ সালে যমুনা ক্লাসিক লিমিটেড নামে কোম্পানী গঠনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যবসা শুরু করে। যা নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন। কোম্পানীর নিয়মানুযায়ী ফেনীর আবুল কাশেম মিলনকে চেয়ারম্যান ও চৌমুহনীর আজিজুর রহমান মানিক কে নিযুক্ত করা হয়। এরপর তারা দুজনেই কোম্পানীর যাবতীয় অফিসিয়াল এবং আর্থিক দায়-দায়ীত্ব পালন করেন। কিন্তু বিগত ৫ বছর পার হয়ে গেলেও তারা কোম্পানীর কোন আয়-ব্যয়ের হিসাব সঠিক ভাবে পরিচালনা পরিষদের সামনে উপস্থাপন করেননি। ইতিপূর্বে আয়-ব্যয়ের হিসেবে ব্যাপক গরমিল থাকায় পরিচালকরা আপত্তি জানায়। এরপর হতেই চেয়ারম্যান ও এমডি হিসাব দিতে নানা ভাবে তালবাহানা করছে বলে জানা যায়।

এরিমধ্যে মিলন ও মানিক যমুনা ক্লাসিক পরিবহনকে নকল করে যমুনা হাই ডিলাক্স নাম দিয়ে নতুন করে পরিবহন ব্যবসা শুরু করে। এতে যমুনা ক্লাসিকের পরিচালকরা পরিবহনের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিষয়টি জানিয়ে যমুনা ক্লাসিকের পরিচালক আবু বকর ছিদ্দিক, শেখ মহি উদ্দিন, কামরুজ্জামান রিয়াজ, আমির হোসেন দয়াল, বেলায়েত হোসাইন, মন্তাজ মিয়া ও মো: হোসেন গত ২৪-৮-২০২০ ইং তারিখে নোয়াখালী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বর্তমানে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করছেন। তিনি একাধিক বার উভয় পক্ষকে বসার উদ্যোগ নিলেও চেয়ারম্যান মিলন ও এমডি মানিক না আসায় বিষয়টি সমাধান হচ্ছেনা।

এদিকে চেয়ারম্যান মিলন ও এমডি মানিকের এই অর্থ আত্মসাত, প্রতারনার প্রতিবাদ করায় ও টাকার হিসাব চাওয়ায় চেয়ারম্যান মিলন ও এমডি মানিক উল্টো মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পত্র-পিত্রকায় নিউজের মাধ্যমে অপপ্রচার, হয়রানি ও গত ২৪ তারিখে থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত পরিবহনটি বন্ধ রেখে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন পরিচালকরা। জনদূর্ভোগ কমাতে বর্তমানে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসির হস্তপেক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারী থেকে পুনরায় পরিবহনটি চালু করা হলে হিসাব নিকাশের কোন গতি এখনো হয়নি।

এদিকে যমুনা ক্লাসিকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলনের বিরুদ্ধে ফেনীতে নানা অপকর্ম ও নাশকতার অভিযোগ রয়েছে। একই ভাবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান মানিকের বিরুদ্ধেও চৌমুহনীতে অপরের সম্পত্তি আত্মসাত, সরকারী সম্পত্তি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এমতাবস্থায় যমুনা ক্লাসিকের পরিচালকরা তাদের পাওনা টাকা আদায়ে ও শান্তিপূর্ন ভাবে পরিবহন ব্যবসা চালাতে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

তবে এসব বিষয়ে যমুনা ক্লাসিকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান মানিকের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান সিকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পরিচালকরা এসপি স্যারের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর পরেই আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।

Close