জাতীয়তথ্য প্রযুক্তিলাইফস্টাইল

আমার নামে নয়, সোহরাওয়ার্দীর নামে স্কুলের নামকরণ হলে আমি খুশি হব’

বাংলার রাজনীতির দুই দিকপাল। এক জন গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। অপরজন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা এবং পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির আন্দোলন ও সংগ্রামে উভয়ের যুগপত্ সাহসী ভূমিকা আজ ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। রাজনীতিতে বড়ো দলের নেতাকর্মীরা যখন পরস্পর কাদা ছুড়াছুড়ি ও একে অপরের চরিত্র হননে ব্যস্ত, তখন ইতিহাস খুঁড়ে পাওয়া এক টুকরো ঘটনা সবার জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে।

 

ঘটনার তারিখ ৩০ মে, ১৯৭২। সদ্যস্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। টাঙ্গাইলের গোপালপুর-ভূয়াপুর থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাতেম আলী তালুকদার একটি ফাইল হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কার্যালয় গণভবনে প্রবেশ করেন। ১৯৬৮ সালে গোপালপুর উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মেমোরিয়াল মডেল হাইস্কুলের নামকরণ পরিবর্তন সম্পর্কিত আবেদন তাতে। আবেদনের সারমর্ম, এলাকার মানুষ পাকিস্তানের জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মেমোরিয়াল নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্কুলটির নামকরণ চান।

 

নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নাম পরিবর্তনের আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন চেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পত্র দেন। আবেদনের সঙ্গে ঐ পত্রটি সঙ্গে নিয়ে সংসদ সদস্য হাতেম আলী তালুকদার বঙ্গবন্ধুর সামনে ফাইলটি উপস্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা বোর্ডের দেওয়া সেই পত্রে নিজ হাতে লেখেন, ‘আমার নামের পরিবর্তে মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের নাম সন্নিবেশিত করলে আমি অত্যন্ত খুশি হব। শেখ মুজিব, ৩০.৫.৭২, প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকার।’

তখন থেকেই সূতি জিন্না মেমোরিয়াল মডেল হাইস্কুল সূতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উচ্চবিদ্যালয় নামে নামকরণ হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কতো বড়ো মাপের নেতা ছিলেন এ ছোট্ট ঘটনা তার প্রমাণ। তাই এ চিঠি হতে পারে ইতিহাসের মূল্যবান অনুষঙ্গ। কারণ বঙ্গবন্ধু মানুষ হিসেবে ছিলেন হিমালয়ের মতো উঁচু। আর নেতা হিসেবে ছিলেন সাগরের মতো উদার।

Close