জাতীয়তথ্য প্রযুক্তিরাজনীতিশিক্ষাঙ্গন

চান্দিনার মাননীয় এমপি মহোদয় কে নিয়ে ওমর ফারুক এর কিছু কথা,বিস্তারিত জেনে নিন।

আশরাফ ভাই চান্দিনার মাটি ও মানুষের অবিসম্বাদিত নেতা

 

“সুখ চাহি নাই, মহারাজ

জয়, জয় চেয়েছিনু,

জয়ী আমি আজ”।।

মানুষের জন্মই তাঁর মৃত্যুর কারন।সুতরাং, যে জন্ম নেয়,সে মৃত্যু বরণ করে।যে জন্মক্ষনের স্মৃতি ও মৃত্যুর ঘটনা মানুষকে যথাক্রমে আনন্দিত ও বেদনাহত করে তা– ইতিহাসের বিষয়রুপে পরিগনিত হয়। আমাদের আশরাফ ভাই অনিবার্য ভাবে ইতিহাসের বিষয় হবেন এবং হয়ে আছেনও।আমরা তাঁকে নিয়ে গর্ব করি,এই দিনে তাঁর নিরোগ ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি।যেসব কারনে আশরাফ ভাই এক অনন্য ব্যাক্তিত্ব ও ইতিহাসের বিষয় হয়ে থাকবেনঃ

বাংলাদেশের বয়সের চেয়ে আশরাফ ভাইয়ের রাজনীতির বয়স বেশী এবং তা আওয়ামীলীগ এর হয়ে। আশরাফ ভাই মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চান্দিনার মানুষকে তিনি প্রানের চেয়েও বেশী ভালবাসেন।আর তাই একদিনের জন্যও তিনি চান্দিনার  মানুষকে ছেড়ে অন্য কোথাও অন্য কোন রাজনৈতিক প্লেটফর্মে যাননি।

 

বাংলদেশে যতগুলি নির্বাচন দলগতভাবে হয়েছে এবং যতগুলি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পেরেছে এর সব কটিতেই তিনি অংশ গ্রহন করেছেন এবং জয়ী হয়েছেন। একটিতে তিনি আদালতের রায়ে নির্বাচিত হয়েছেন কিন্তু ততদিনে সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

 

১৯৭৫ এ জাতীয় সংকটের পর দেশ যখন স্বাধীনতা বিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীলদের খপ্পরে তখন তিনি চান্দিনার মানুষকে ছেড়ে একদিনের জন্যও অন্য কোন রাজনৈতিক প্লেটফর্মে  যান নি।খুনী জিয়া তখন আদর্শের বিকিকিনি করে দলভারী করছেন।রাজনীতির সকল সৌন্দর্য এবং নৈতিকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে আওয়ামী বিরোধী তথা স্বাধীনতা বিরোধী একটি মঞ্চ তৈরী করেন যেখানে চরম ডান-বাম ও মধ্যপন্থার দলছুট নেতা কর্মী এসে হাজির হন।ঠিক সে সময় থেকে চান্দিনার মানুষকে তিনি সুখে-দুঃখে  আগলিয়ে রাখেন ২১টি বছর পর্যন্ত।

 

চান্দিনাতে তিনি আওয়ামীলীগকে কলুষিত হতে দেন নি।তিনি সকল লোভ-লালসাকে পায়ে ঠেলে মুক্তিকামী মানুষের ভালবাসায় সিক্ত থেকেছেন। মুজিব আদর্শকে যিনি মনে-মস্তিষ্কে স্থান দিয়েছেন তাঁর নিকট যে কোন ক্ষমতা কিম্বা স্বার্থ-অর্থের লোভ খুবই তুচ্ছ।আর তাই “Money is no problem, I will make politics difficult for the politicians”—খুনী জিয়ার সেই ঘৃন্য কিন্তু লোভনীয় আহবানে সাড়া দেবার মতো সামান্যতম চেষ্টা তিনি করেন নি।এমনকি স্বৈরশাসক এরশাদও তাঁকে মন্ত্রীত্বের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে বাগাতে পারেননি।অথচ জিয়া-এরশাদের রাজনীতি সহ ৫/৬ বার দল পরিবর্তন করে ক্ষমতা ও লুটপাটের আস্বাদ গ্রহন করার মতো নেতা চান্দিনার মাটিতে এখনও আছেন।

 

দলের অভ্যন্তরীণ শত দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও সংকটময় পরিস্থিতিকে গভীর অন্তদৃষ্টি ও দূরদৃষ্টি দিয়ে সব রকমের বিচ্যুতি সফলতার সাথে সামাল দিয়েছেন। অনেক ব্যাথা-বেদনা হজম করেছেন নীরবে-নিভৃতে।  নেতা-কর্মীদের বুঝতে দেননি মোটেও।বিষ খেয়ে বিষ হজম করেছেন।কারন তিনি যে রবী ঠাকুরের সেই বানীমন্ত্রে দীক্ষিত—

 

“দুঃখ যদি না পাবে তো

দুঃখ তোমার ঘুচবে কবে?

বিষকে বিষের দাহ দিয়ে

দহন করে মারতে হবে”।।

 

তিনি হলেন এমন এক যাদুকরী চরিত্রের রাজনীতিবিদ,একবার যে কর্মী বা সমর্থক-ভক্ত তাঁর সান্নিধ্য -ভালবাসা পেয়েছেন তিনি কোন কারনে হয়তো অভিমান করে বড়জোর দূরে থেকেছেন কিন্তু দল ছেড়ে যেতে পারেন নি। এই রকমের অদ্ভুত যাদুকরী চরিত্রের এক মায়াশক্তি তাঁর সহজাত গুন। তিনি তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কোন স্পট লাগতে দেননি।

 

তিনি হলেন প্রানের চান্দিনায় এক পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক, যিনি মহীরুহ,এক ব্যাতিক্রমী বাস্তবতা।আর তাই অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফ চান্দিনার রাজনীতিতে এক অমোঘ নিয়তি।তিনি যা চান তা-ই হয়।তাঁকে অতিক্রম করা দুঃসাধ্য।

 

তাঁর কর্মী ব্যাবস্থাপনা নীতি,সংকট মোকাবেলার পদ্ধতি সর্বোপরি, বিরোধীদের মোকাবেলার যে কৌশল-দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন বিশেষ করে নিকট অতীতে, সেগুলি এক কথায় অভাবনীয়। কখনও মনে হয়েছে তিনি কি খুব ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত! কখনও মনে হয়েছে তাঁর বিশেষ কোন সিদ্ধান্তটির কারনে দলে বিরুপ প্রভাব পড়বে,কিন্তু পরক্ষনেই দেখা গেল সব মিলিয়ে গেছে।

 

আওয়ামীলীগ এর মতো একটা প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ দলের নেতার কাছে দলের ভিতরে এবং বাহিরে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের দাবী ও প্রত্যাশা একটু বেশী-ই থাকবে, এটি খুবই স্বাভাবিক কিন্তু বেশীরভাগ মানুষই তাঁর কর্মকান্ডে অসন্তুষ্ট নয় একথা আমি হলফ করে বলতে পারি। তাঁর দিবা-রাত্রি ক্লান্তিহীন কর্মপ্রয়াস এখনও কর্মপাগল সাহসী, প্রত্যয়ী ও সংগ্রামী মানুষের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।সপ্তাহে চারদিন চান্দিনায় যেভাবে ব্যাস্ত সময় কাটান তাতে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, যে কোন পরিশ্রমী তরুনও ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করে জেনেছি যে, তিনি চান্দিনার মানুষের সাথে কথা না বললে এবং এদের সাথে ঘুরে-ফিরে সাক্ষাত না করলে অস্বস্তিতে ভোগেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনটা অন্য কোন নেতা কতোটা করতে পারবেন এবিষয়ে আমি সন্দিগ্ধ।

 

এতোসব নিয়ে তিনি-ই আমাদের নেতা, আমাদের অহংকার।তিনি সব কিছু পারেন, সব কিছু জানেন এবং কেমন করে জানি লাখো মানুষের অন্তরে হাসি ফুটাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। তাঁর কাজ করার ধরন-ধারন কোন সাধারন মানবীয় বলে আমার মনে হয় না,সত্য করে বললে এগুলি অতিমানবীয় বৈশিষ্ট্য! যে গুন সবার থাকেনা। তাই তিনি অনন্য।তিনি যেভাবে প্রতিকুল পরিস্থিতিকে সামাল দেন, অবাধ্যকে বাধ্য করেন,শত্রুকে মিত্র করেন এবং বিপরীত স্বার্থ সংস্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের এককাঁতারে দাঁড় করিয়ে দলীয় স্বার্থ আদায় করে নিতে পারেন, অন্য কোন নেতার পক্ষে এরকম সক্ষমতা প্রদর্শন বিড়ল ঘটনা। আল্লাহ আশরাফ ভাইকে নেক হায়াত দান করুন আমিন

ধন্ধবান্তে,ওমর ফারুক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক চান্দিনার সময়।

 

Close