ফিচারশিক্ষাঙ্গন

বিশ্বাসে মিলে বস্তু, তর্কে বহুদূর-লেখকঃ জসীম ভুঁইয়া।

বিশ্বাসে মিলে বস্তু, তর্কে বহুদূর-লেখকঃ জসীম ভুঁইয়া।

 

বিশ্বাসের ভয়াবহতা পৃথিবী জুড়েই, অধিকাংশ মানুষের মনে বিশ্বাস থেকে ভালবাসার জন্ম নেয়, আর অবিশ্বাসের সূত্র ধরেই তা ধ্বংস হয়ে যায়।

 

কিছু মানুষ বড়ই অদ্ভুত,  শুধুমাত্র অবিশ্বাসের জন্ম নিলেই সে বদলায়না। মাঝে মাঝে সে, কারণে অকারণে বদলায়, বদলানোটাই মানুষের নেশা

 

আর ভুল বুঝাটাই হলো মানুষের পেশা।

 

সময়ের স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিশ্বাস অবিশ্বাসের পালা বদল।

 

প্রিয় জনের কাছে হচ্ছে শত্রু,আর খুব কাছের মানুষটা দেখছে ঘৃনার চোখে, এ যেন রঙ নয় বহুরুপের খেলা।

 

কিন্তু বিশ্বাস-অবিশ্বাস কেন করতে হয়? এমন প্রশ্নের উত্তর একটাই, তা হলোঃ- বিশ্বাস করা থেকেই অবিশ্বাসের জন্ম হয়।

 

অবিশ্বাসের জন্ম হয় দুভাবে:

 

একটি হল, “সন্দেহ” যদিও কিছু কিছু সময় মানুষ সন্দেহ করতেও ভালবাসে।

 

আর আপরটি, “অবিশ্বাস” যা জন্ম হয় বিশ্বাস ভাঙ্গা থেকে। ঠিক তখনি মানুষ তার বিশ্বাসকেই অবিশ্বাস করেন।

 

অতি বিশ্বাস যেখানে,অবিশ্বাসের জন্মও নেই সেখানে।

 

বিশ্বাস না থাকলে সম্পর্ক টিকেনা, যদিও কথাটি সত্যি। তবে বিশ্বাস থাকলেই যে সব সম্পর্ক টিকবে একথা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কিন্ত আজ কাল বিশ্বাসের মূল্যায়ন হয় না, অবিশ্বাসের চাপা বাজীতে ধামাচাপা  পরে যায়।

 

চার পাশে তাকালে মনে  হয় যেনো, ডিজিটাল যুগের ভালবাসা ও সম্পর্ক বেশির ভাগ অংশেই  ফেইক আর ক্লোন, নকল ভালোবাসার মায়া জালে বন্দী স্বার্থের টানে।

 

অনেক সম্পর্ক আজ ফেইসবুক এর মতো নিমিষেই হচ্ছে ফ্রেন্ড আর আনফ্রেন্ড, স্বার্থের  টানে চলছে পালা বদলের খেলা। তবে অবিশ্বাসটা সত্য না মিথ্যা তা যাচাই  করে তার পর বিশ্বাস ধংস করা উচিৎ প্রিয় মানুষটির উপর থেকে। উচিৎ বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মূল্যায়ন করা।

 

মূলতঃ দুর্বলতা থেকেই  বিশ্বাস/অবিশ্বাসের জন্ম।

 

বিশ্বাস যেরকম দুভাবে জন্ম নেয় ঠিক তেমনি অবিশ্বাস আবার দু ধরনের হয়। যেমন এক জন মানুষ আরেক জন মানুষকে পুরোপুরি অবিশ্বাস করে এবং অন্যটি আংশিক বিশ্বাস। আংশিক অবিশ্বাস সেটা, যেটা সন্দেহ করতেও ভালোবেসে  করে। আর পুরোপুরি বিশ্বাস  হলো, বর্তমানে আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে আপন ভেবে বিশ্বাস করেন।

 

কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয়, কিছু কিছু সময়ও অবিশ্বাসের কারনে সম্পর্কে ফাটল ধরে। আর বিশ্বাস যখন ছাই হয়ে যায়, ভালোবাসা তখন নিমিষেই  হয়ে যায় অবিশ্বাস কাছে পরাজিত।

 

জীবনে চলার পথে জীবন যুদ্ধে আপনার প্রিয়জনকে কারনে অকারণে আপনার বলা ছোট খাটো মিথ্যা কথা গুলি একদিন এক পাহাড় সমান অবিশ্বাসের জন্ম দেয়। তখন এক আকাশ সত্য বলেও ফিরে পাবেন না সেই মানুষটির কাছে আপনার বিশ্বাস। আর যদি আপনার সেই প্রিয় মানুষটি  মহাপন্ডিত হয়ে থাকে তাহলে আপনার সব টুকু সত্যিটাই তাহার কাছে মিথ্যার ভান্ডার বলে গন্য হবে।

 

বিবেচনা করলে দেখা যায় আত্মবিশ্বাসটা খুব কাজের। আপনার ভালোবাসাটাও বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে, কারন এটা দেখা যায়না, বুঝে নিতে হয়, অনুভব করতে হয় তাইতো বিশ্বাস করতে হয়। আর এই আত্মবিশ্বাস আপনাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

 

ধরুন, একটি বাচ্চাকে তখনই শূন্যে ছুড়ে মারবেন যখন আপনার আত্মবিশ্বাস থাকবে যে শিশুটিকে আপনি নিরাপদে ধরতে পারবেন।

 

আপনার যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে আপনি পরীক্ষায় পাশ করবেন, তবে অধিকাংশ সময়ই আপনি পাশ করে যাবেন। আত্মবিশ্বাস যতোটা জরুরী, বিশ্বাস/অবিশ্বাস ততোটা জরুরী নয়। মানুষকে যাতে শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর চলতে না হয় সেজন্য বিচক্ষণ মানুষগুলো নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছে অবিশ্বাসের জন্ম দিতে। সত্যকে বলছে মিথ্যা আর মিথ্যাকে বলছে সত্য।

 

অনেক ক্ষেত্রে অজানা বিষয়গুলোকেই বিশ্বাস করতে হয়। একটা কলম আপনার হাতে দিয়ে যদি বলা হয়? যে এটা চকলেট! আপনি হেঁসেই উড়িয়ে দিবেন, কারন আপনি জানেন যে এটা কলম। এ ব্যাপারে বিশ্বাস/অবিশ্বাস করা লাগবেনা। কিন্তু কেউ যদি বলে যে পৃথিবীতে এলিয়ন দেখা গেছে! তখন আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে কারন আপনি নিজেই শিউর না।

 

আসলে প্রেম ভালবাসা সংসার জীবনে পৃথিবীর শুরু থেকে ছিল এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। দিবে বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের জন্ম।

 

প্রেম- ভালোবাসায় প্রতারনা ছিলো আছে এবং থাকবে। বাকি সম্পর্কটুকুও রয়ে যাবে ঘটনার অন্তরালে, ঠিক ঝরা পাতার মত।

 

আর একারনেই বলা হয়েছে যে,  বিশ্বাস করা থেকেই অবিশ্বাসের জন্ম হয়।

 

Close