অপরাধ

কুরছাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

কুরছাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

।। মো. আবদুল বাতেন।।

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার কুরছাপ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে এনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

রবিবার (৪ অক্টোবর) সকালে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ ওই বিক্ষোভ মিছিলটি এলাকায় বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় তারা নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

ওই গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ জানান- গত ২০১৪সালে সফিকুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক পদে এবং কামাল হোসেন সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে কুরছাপ উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান। চলতি বছরে করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফিকুল ইসলাম অন্য একটি বিদ্যালয়ে যোগদান করায় কুরছাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকপদটি শূন্য হয়। পরবর্তীতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করতে মরিয়া হয়ে উঠেন সহকারি প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন। শুরু হয় তার সকল কৌশলী কার্যক্রম। পরিকল্পনা মোতাবেক ওই শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সে মোতাবেক ২০জন প্রার্থী আবেদন করে পরীক্ষায় ১৪জন প্রার্থী অংশ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম নম্বর পেয়েছিলেন কামাল হোসেন। তারপরও নিয়োগ কমিটির সাথে আঁত-আঁত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন কামাল হোসেন। যে কিনা ৭ শ্রেণীর অংক ক্লাস নিতেই অক্ষম।

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী রাফাত তাবাস্সুম ও অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সাইফুল ইসলাম জানায়- স্যার মোবাইল ফোন ছাড়া ক্লাস করাইতে পারেন না। যখনই ক্লাসে আসেন তখনই মোবাইল ফোনে দেখে দেখে আমাদের অংক ক্লাস নেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া ওই গ্রামের সাবেক শিক্ষক মোখলেছুর রহমান, মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম, মাহাবুবুর রহমান, বজলুর রহমান, সফিউল্লাহ, মামুনুর রশিদ ভূইয়া সহ আরও অনেকে জানান- বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ অনৈতিক ভাবে ওই শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। আমরা ওই শিক্ষককের অপসারণ দাবী করছি। অন্যথায় ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ওই শিক্ষককে অপসারণ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল হোসেন জানান- বিদ্যালয়ের কিছু জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আমি হস্তক্ষেপ করেছি। তা নিয়ে ক্ষুদ্ধ এলাকার কতিপয় লোকজন। তারাই আমাকে সহ্য করতে না পেরে এমন আচরণ করছে।

দেবীদ্বার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান- নিয়োগ পরীক্ষা স্বচ্ছতার সাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তাকে নিয়োগ দিতে আমরা সুপারিশ করেছিলাম। নিয়োগ দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।

নিয়োগ কমিটিতে থাকা সভাপতির প্রতিনিধি ও সভাপতি সামিউল আহসান এর ছেলে রাফিউল আহসান এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Close