চান্দিনা

চান্দিনায় বিএনপি-এলডিপি’র ৪৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলায় প্রতিক্রিয়া ড. রেদোয়ানের;

চান্দিনায় বিএনপি-এলডিপি’র ৪৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলায় প্রতিক্রিয়া ড. রেদোয়ানের;

 

জেএসডি প্রার্থী ও সাবেক পৌর মেয়র সহ ২০ নেতা-কর্মী কারাগারে

 

প্রতিনিধি, চান্দিনা (কুমিল্লা)

কুমিল্লার চান্দিনায় যুবলীগ নেতার উপর ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর সমর্থিত নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনায় জেএসডি মনোনীত প্রার্থী সহ বিএনপি ও এলডিপি’র ২০ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। এদের মধ্যে চান্দিনা পৌরসভার সাবেক মেয়রও রয়েছেন।

সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) কুমিল্লা বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে তারা জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

জানা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ফতেহপুর এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন আহত হয়। ওই ঘটনায় তার ভাই সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ৩৩জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫জনকে আসামী করে চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রবিবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩জনকে আটক করে আদালত হাজির করে। বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। সোমবার একই মামলার ১৯জন আসামী ৭নং আমলী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরী তাদের মধ্যে ২জনের জামিন মঞ্জুর করলেও ১৭ জনের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়।

তারা হলেন- চান্দিনা আসন থেকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি’র মনোনীত প্রার্থী এলডিপি’র গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রিয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা উত্তর জেলা গণতান্ত্রিক যুবদল সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু তাহের, সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল মান্নান সরকার, উপজেলা যুবদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমেদ কাকুল, উপজেলা গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সাক্কু, এলডিপি নেতা ছাতাড্ডা গ্রামের শাহজাহান, একই গ্রামের সাকিল আহেমদ, চাঁদসার গ্রামে মিঠু চৌধুরী, কুটুম্বপুর গ্রামের আগজর মেম্বার, একই গ্রামের শাহজাহান, এতবারপুর গ্রামের মাঈন উদ্দিন, নাটিঙ্গী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, শব্দুলপুর গ্রামের শাহজাহান, নাওতলা গ্রামে রফিক, গণিপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন ভূইয়া, ফরিদপুর গ্রামের কবির হোসেন, হারং গ্রামের পিয়াল। এর আগে আটক হওয়া ৩জন হলেন- পৌর এলডিপি সাধারণ সম্পাদক শাহআলম, পৌর গণতান্ত্রিক ছাত্রদল আহবায়ক তারেকুল ইসলাম বাবু এবং চিলোড়া গ্রামের এলডিপি নেতা শাহআলম।

আসামী পক্ষের কৌশলী এড. কাইয়ূমুল হক রিংকু জানান, যারা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছে তাদের কারও বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য কোন সুনির্দিষ্ট ধারা ছিল না। এছাড়া অধ্যাপক আবু তাহের নামে যে আসামী রয়েছেন তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি’র মনোনীত প্রার্থী। তার মনোনয়নপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তারপরও বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী ড. রেদোয়ান আহমেদ জানান, ‘ফতেহপুরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ ঘটে। এতে আমার দুই কর্মী মন্দির মিয়ার ছেলে আলমগীর ও জুয়েল মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। তারা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমি থানায় মামলা দিতে চাইলেও আমার মামলা গ্রহণ করা হয়নি। আমি রিটার্নিং অফিসার, জেলা পুলিশ সুপার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জকে তাৎক্ষণিক ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেছি। আর দায়ের করা মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে মূলত তাদের কেউ ওই ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল না। কিন্তু সাজানো একটি মামলায় পুরো উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের আসামী করা হয়েছে। এমনকি থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পূর্বেই আমার দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারপরও আমার নেতা-কর্মীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হলে সুনির্দিষ্ট বা জামিন অযোগ্য কোন ধারা না থাকার পরও তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফলে নির্বাচনের আগেই আমি বড় ক্ষতিগ্রস্থ হলাম।’

এদিকে, ১৫ ডিসেম্বরের ঘটনাকে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ নয় বলে দাবী করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবি এড. মহিউদ্দিন আহমেদ আলম। তিনি জানান, ওই ঘটনায় দুই পক্ষের নয়। যুবলীগ নেতা-কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় এলডিপি ও বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

 

 

 

 

 

 

Close