শিক্ষাঙ্গন

বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানুষ ও দেশের পরিচিত মুখ।

লেখকঃজুয়েল আহমেদ,শিক্ষার্থী,সেশনঃ ২০১২-১৩,

(নতুন সম্ভাবনার দিশারী )উত্তরের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে ২০০৮ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়। রংপুরের মানুষের দাবী ছিল মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক, জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রূপান্তর করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর করেন। শুরু থেকেই নানা চড়াই- উৎরাই পেরিয়ে আসছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, তার সময়কাল ছিল ৬ মাস। ২য় উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল জলিল মিয়া; বিশ্ববিদ্যালয়টিকে তিনি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করেছিলেন।

দুর্নীতির অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মেয়াদ শেষ হবার একদিন আগেই তাকে বিদায় নিতে হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র উপাচার্য হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগে হাজত খাটেন। রংপুর এর মানুষের আন্দোলন, সংগ্রামের ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়- যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার বাস্তব রূপ দিতে পারেন নি পূর্ববর্তী কোন উপাচার্য-ই। ৪র্থ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের গ্রেড-১ প্রফেসর, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষন পরিষদ (জানিপপ)-এর চেয়ারম্যান, দ্য ডেইলি এশিয়ান এইজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার। তখন তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানুষ ও দেশের পরিচিত মুখ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে উত্তরের নানান রকমের সমস্যা জর্জরিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা অভিভাবক হিসেবে প্রেরণ করেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যা সমাধানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে সফলতার সাথে তিনি তার দায়িত্বের ৩য় বছর সমাপ্ত করেছেন, বাকী আছে আরেকটি বছর। ২/৪ টা বিচ্ছিন্ন ঘটনা (যেগুলা তিনি খুব সুন্দরভাবে সমাধানও করেছেন) বাদে ভালভাবেই ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছেন।

নিয়োগ বাণিজ্য ও ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ, ক্যাম্পাসে ওয়াই- ফাই সংযোগ, নতুন নতুন বাস (ওয়াই- ফাই ও স্মার্ট টিভি যুক্ত) সংযোজন , সেশনজট নিরসনে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ, নিজেই ক্লাশ, পরীক্ষা নেয়া যা দেশের ইতিহাসে বিরল ( উপাচার্যের পাঠদান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে), দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য ফাউন্ডেশন ট্রেইনিং কোর্স ও কর্মচারীদের জন্য ইন্ডাকশন ট্রেইনিং কোর্স এর ব্যবস্থা, নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বোধনী সমাবর্তন, ফেন্সিং ক্লাব, নারীদের আত্মরক্ষার্থে ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা, বিএনসিসি এবং স্কাউট এর অফিস স্থাপন, ব্যাংকের নতুন শাখা স্থাপনের কার্যক্রম, ক্যাম্পাস রেডিও, ক্যাফেটেরিয়া, অবকাঠামোগত উন্নয়ন (শেখ হাসিনা হল ও ডক্টর ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট ভবন নির্মাণের কাজ চলমান), ভার্চুয়াল ক্লাশ রুম, যানবাহনের গ্যারেজ স্থাপন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য স্বতন্ত্র আবাসস্থল নির্মাণ, রাস্তা সংস্কার ইত্যাদি কার্যক্রম চালুসহ আরো বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা করেছেন, যেগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ে অনুমোদনও হয়ে গেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশিরভাগ ডিপার্টমেন্টে সেশনজট নেই বললেই চলে।

সেশনজট নিরসনের উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, যার বাস্তব রূপ শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে পেতেও শুরু করেছে। মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীদের সাময়িক ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে অনলাইনে ক্লাশ শুরুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্বাস করি যে, মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যারের সুদৃঢ় নেতৃত্বে আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাস আরো এগিয়ে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন- ২০২১ বাস্তবায়নে মাননীয় উপাচার্য স্যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা করি।

লেখকঃজুয়েল আহমেদ,শিক্ষার্থী,সেশনঃ ২০১২-১৩, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

Close