অপরাধ

মেয়েকে যৌন নির্যাতনের মামলা করায় বাবাকে কুপিয়ে আহত

মেহেরপুরে মেয়েকে যৌন নির্যাতনের মামলা করায় বাবাকে কুপিয়ে আহত

 

মেহেরপুরঃ মেহেরপুরে মেয়েকে যৌন নির্যাতনের মামলা করায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কপিয়ে জখম করেছে বখাটেরা। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামে। এ গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে সোনিয়া সুলতানা।

সোনিয়া সুলতানা জানান, গত ১লা আগষ্ট রাতে রামনগর গ্রামের ফরমান আলীর ছেলে পল্লী চিকিৎসক সেলিম আমার ঘরে প্রবেশ করে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে। এসময় আমি চিৎকার করলে আমার পিতা সহ প্রতিবেশিরা সেলিমকে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখে এবং মারধর করে। সেলিম একই গ্রামের ফরমান আলীর ছেলে। পরে সেলিমের দুলাভাই বামুন্দী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবাইদুর রহমান কমল, বামন্দি ইউপি সদস্য হাবিল উদ্দীন, ভবানীপুর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য সেলিমের চিকিৎসা ও স্থানীয়ভাবে মিমাংসার শর্তে সেলিমকে নিয়ে যায়।

সেলিমকে প্রথমে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার দুদিন পরে সেলিমের পরিবারের পক্ষ থেকে গাংনী থানায় সেলিমকে ডেকে নিয়ে মারধরের একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।

এদিকে মেয়ের যৌন নির্যাতন চেষ্টার বিচার পেতে গত ৬ আগষ্ট বৃহস্পতিবার মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে রামনগর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সোনিয়ার বাবা মান্নান।

সোনিয়ার বাবা মান্নান জানান, মামলা দায়ের করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সেলিমের সহযোগীরা আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে। হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ার কারনে আবারো হামলা হতে পারে এমন আশংকা প্রকাশ করে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন তিনি।

তিনি আরো জানান, ১ মাস পূর্বে হঠাৎ আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে রামনগর গ্রামের স্থানীয় চিকিৎসক সেলিম হোসেন আমার বাড়িতে এসে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। এরপর মেয়ের মোবাইল নম্বর নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কু প্রস্তাব দিতে থাকে। গত ১ আগষ্ট রাতে আমার মেয়ের ঘরে প্রবেশ করে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার হওয়ার পরদিন ৭ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টার দিকে রামনগর বাজারে গেলে সেলিমের সহযোগি রামনগর গ্রামের আরমান আলীর ছেলে ওয়াসিম,নজরুল ইসলামের ছেলে সাহাবুল ইসলাম,রেজাউলের ছেলে রানা,রুবেল ও হকাজ্জেলের ছেলে তরিকুল ইসলাম আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে গাংনী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করে।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সেলিমের দুলাভাই বামুন্দী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবাইদুর রহমান কমলের মোবাইল ফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

সোনিয়া সুলতানার আইনজীবি জানান,মামলাটি আমলে নিয়ে বিজ্ঞ বিচারক গাংনী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে হামলার ঘটনায় দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালতে লিখিত আবেদন করা হবে।

গাংনী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আব্দুল মান্নানের মাথার মাঝখানে ধারালো অস্ত্রের গভীর আগাত হয়েছে। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, আব্দুল মান্নানকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প সহ তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Close