দাউদকান্দি

দাউদকান্দিতে অভিযানের পরও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।

দাউদকান্দিতে অভিযানের পরও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।

।।সোহেল রানা।।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ফসলি জমি কৃষি মাঠ থেকে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ অবাধে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে যাচ্ছে। এতে ভাঙ্গনের হুমকিতে আশপাশের নিরীহ কৃষকের ফসলের জমি। প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে বালু-মাটি উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত অবৈধ ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হলেও কোনভাবেই কৃষি মাঠ থেকে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। বালুখেকোরা আইনের তোয়াক্কা না করে পুন:রায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করেই যাচ্ছে। দাউদকান্দির মালিখিল, বেকিনগর, মালিগাঁও, কালাসোনা, মোহাম্মদপুর নতুন বাজার সহ উপজেলার প্রতিটি গ্ৰামের ফসলি জমি কৃষি মাঠ থেকে একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত অবাধে অপরিকল্পিত অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের কারণে গর্তে পরিণিত হচ্ছে কৃষি মাঠ। যেকোনো মুহূর্তে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে আশপাশের কৃষি জমি।
স্থানীয়দের তথ্য সূত্রে’ সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ ১৯নং (দঃ) ইউনিয়ন পরিষদের মালিখিল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে ২ টি ড্রেজার চলছে দেদারছে। কিছুদিন পূর্বে অবৈধভাবে মাটি বালি উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার ব্যবহৃত পাইপ ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। দুই-তিন দিন যেতে না যেতেই রহস্যজনক কারণে আবার বালুদস্যুরা বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছেন, মোঃ রেজাউল করিম, মাসুদ। কৃষি মাঠ থেকে বালু উত্তোলন করায় এলাকার লোকজনের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধভাবে কৃষি মাঠের ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী ও দলীয় লোকজন হওয়ায় কেউ কিছু বলতে সাহস পান না। বালু উত্তোলনের কারণে কৃষিজমি, বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট হুমকির মুখে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, মোঃ রেজাউল করিম কোনো এক মন্ত্রণালয়ের গাড়ি চালান ও মাসুদ দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে চলাফেরা থাকায় মাটি উত্তোলনের বিষয়ে কিছু বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করেন। কৃষি মাঠের ফসলি জমি থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকারী, রেজাউল করিম জানান, অনেকেই ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের সুপারিশ রয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে কৃষিজমি থেকে ১৮-২০টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি বালি উত্তোলন এবং ৭-৮টি ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে প্রতিদিন ট্রাক্টার দিয়ে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন ও ভেকু দিয়ে বালু তোলা অন্যায় জেনেও দেদারছে এসব কাজ করে যাচ্ছেন তারা। স্থানীয়দের দাবি ড্রেজার মেশিন জব্দ ও পাইপ নষ্ট করার পাশাপাশি আইনের আওতায় নিয়ে জেল জরিমানা করা হলে অনেকটাই অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলনে নিয়ন্ত্রণ আসবে বলে আশা করছেন তারা। এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামরুল ইসলাম খাঁন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুকান্ত সাহা বলেন, এর আগে ঐ ড্রেজার মেশিন গুলোকে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ড্রেজার মেশিনের পাইপ নষ্ট করা হয়েছে ,পুরো উপজেলাজুড়ে অভিযান চলমান, যেকোনো মুহূর্তে সেখানে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন।

Close