চান্দিনাজেলার খবর

নিমসারে সবজি বাজারে আগুন, বৃষ্টি,বন্যাকে দুষছে বিক্রেতারা।

নিমসারে সবজি বাজারে আগুন, বৃষ্টি,বন্যাকে দুষছে বিক্রেতারা।

বাংলাদেশের হাতেগোনা বড় আকারের সবজির অন্যতম বৃহৎ কুমিল্লার নিমসার কাঁচাবাজার। স্থানীয়সহ সারাদেশ থেকে আসা সব্জির পাইকারী বেচাকেনা হয় এই বাজারে। কুমিল্লা ও এর আশপাশের একাধিক জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এই বাজার থেকে পাইকারী কিনে নিচ্ছে আলু,ঝিঙ্গা,পটলসহ সর্বধরনের শাক-সব্জি। বর্তমানে বাজারে পণ্যের সরবরাহ প্রচুর থাকলেও সব ধরনের শাক-সব্জির দাম উর্ধ্বমুখী। একমুঠো শাক সর্বনিন্ম ২৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকায় পাইকারী দামে সিম বিক্রি সাম্প্রতিক সময়ে ছিল রেকর্ড মুল্যে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের নিমসার বাজারটি দেশের প্রধান জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত। যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধাজনক হওয়ায় বাজারটিতে সবসময়ই ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভীড় অনেক। ঠাকুরগাও,নিলফামারী,খুলনা,বরিশাল,নওগঁ,কুষ্টিয়া,রাজশাহী, কক্সবাজার,চট্টগ্রাম,নরসিংদী,খাগড়াছড়ি, সিরাজগঞ্জ,পাবনা, ঢাকার সাভারছাড়াও স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত শাক-সব্জি,ফল এই বাজারে বেচাঁ-কেনা হচ্ছে প্রতিদিন। গতকাল সোমবার সরেজমিন বাজার ঘুরে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, এই বাজারের অন্যতম উপকরণ যেমন লাউ,মিষ্টিকুমড়া,লাল শাক,ডাটা,পুইশাক,পাট শাক,পালংসহ বিভিন্ন শ্রেনীর শাক স্থানীয় বাজার থেকেই সরবরাহ হচ্ছে। পাইকার এই বাজারে গতকালের মুল্য তালিকায় প্রায় প্রতিটি শাকের একমুঠো কওে থাকা আটিগুলো গড়ে ২০/২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে ঠাকুরগাঁড় থেকে আসা প্রতি কেজি বেগুণ ৭৫-৮০,কুষ্টিয়া থেকে আসা শশা (মারফা) ৩৫,নওগাঁর পটল ৫৫-৬০,ঠাকুৃরগাঁও থেকে আসা করোলা ৫৫-৬০, রাজশাহীর লাউ প্রতি পিছ ৫৫-৬০, খুলনার মিষ্টি কুমড়া ৪৫-৫০,চাপাই নবাবগঞ্জ,রাজশাহীর চালকুমড়া ৪২-৪৫,নরসিংদীর কাঁকড়োল ৭৫ ,ঢাকা সাভারের পেঁপে ২৫-৩০, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডেন সিম ২৫০ , খাগড়াছড়ি,রামগড়ের ছড়া মুখী ৪৫-৫০,রামগড়ের জলপাই ৩০-৮০ , কক্সবাজারের চকোড়িয়ার চিচিঙ্গা ৫৫-৬০,রাজশাহীর ফুল কপি ১১০-১২০, মেহেরপুরের পাতা কপি ( ছোটআকারের) প্রতি পিছ ৪৫,বরবটি ১২০,ঝিঙ্গা ৬০-৬৫,কাঁচামরিচ ২’শ ,টমেটো ২১০-২২০ টাকা ছিল গতকালের নিমসার বাজারে উল্লেখিত শাক-সব্জিগুলোর সর্বনি¤œ পাইকারী বিক্রয় মুল্যে। এই বাজারে বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক-কাভার্ডভ্যানযোগে নিয়ে আসা একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে কিনে প্রথমে আড়তে ও পওে ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানে উঠানো, সর্বশেষ নিমসার বাজারে পৌঁছতে পরিবাহন বাবদ প্রতিটি গাড়িকে সর্বনিন্ম ২০-২৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০-৪৫ হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এরপর নিমসার বাজারে পল্য খালাস, ইজারা ইত্যাদি খাতেও অনেক টাকা গুনতে হওয়ায় তাদেও খুব একটা লাভ থাকে না। এছাড়াও বিভিন্ন পন্যেও অতিরিক্ত চালান চলে আসলে পন্যেও মুল্যে কমে যাওয়ায় অনেক সময় ব্যবসায়ীক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় বাজাওে বেচাকেনা অনেক ভালো। এদিকে শাক-সব্জির উর্ধ্ব মুল্যের বিষয়ে কথা হয় বাজারের আলম,সালামসহ একাধিক সব্জি বিক্রেতার সাথে। তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বারবার সব্জিক্ষেত জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে । ফলে আগের তুলনায় দাম কিছুটা বেশী। কথা হয়, সফিক বানিজ্যালয়ের মালিক আজিম, ময়নামতি বানিজ্যালয়ের মালিক আবাদ মিয়া,ভাই ভাই বানিজ্যালয়ের বিল্লাল, নিউ আনন্দ বানিজ্যালয়ের খলিলুর রহমান প্রমুখের সাথে। তারা জানান, অল্প কিছুদিন আগেও উল্লেখিত তরিতরকারী-শাকসব্জির দাম অপেক্ষাকৃত কম ছিল। কিছু দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যাসহ সারাদেশে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় সব্জিক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এঅবস্থায় চাহিদা বেশীর বিপরীতে বাজারে আমদানী কম হওয়ায় মুল্য তালিকা বেড়ে গেছে। সরবরাহ বাড়লে মুল্য কমে যাবে বলেও তারা জানান।

Close