জাতীয়

চান্দিনার মানুষের ভালবাসার ঋণ তিনি প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়া শোধ করবেন ,বঙ্গবন্ধুর মতো এটাই তাঁর অঙ্গীকার,

চান্দিনার মানুষের ভালবাসার ঋণ তিনি প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়া শোধ করবেন ,বঙ্গবন্ধুর মতো এটাই তাঁর অঙ্গীকার ।

মায়ের আশীর্বাদে আলী আশরাফের গাড়িতে পতাকা উড়েছিল

১৯৬২’র শিক্ষা  আন্দোলন থেকে যার শুরু, ৬৪’র হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে  কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের তরুণ ছাত্রলীগ নেতা আজকের অধ্যাপক মোঃ আলী  আশরাফ। ৬৬’র ৬ দফার পক্ষের ফেরিওয়ালা আলী আশরাফ ,৬৯ এর গণঅভ্যুথানে  চান্দিনার সবচেয়ে অগ্রগামী ছাত্র নেতা, আইউব বিরোধী আন্দলনের কিংবদন্তী  আলীআশরাফ। ৭০ এর অসহযোগ আন্দোলনে চাঁদ-তারা পতাকা পুড়িয়ে লাল সবুজের মাঝে  হলুদ মানচিত্র খচিত পতাকা বহনের অগ্রসেনা আলী আশরাফ। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে এক  ঝাঁক তরুণ/ যুবককে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মুজিব নগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কঠিন দায়িত্বটি গ্রহণ করেন ।

 মুজিব নগর সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী্,  পররাষ্ট্র সচিব আব্দুল ফাত্তাহ’র সাথে দিন রাত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে  মুক্তিযুদ্ধের তথ্য আদান প্রধান করতেন । বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে বাংলা  দেশের পক্ষের ও সমাজতান্ত্রিক বিশ্বে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে  তুলেন । তিনি ভাল ইংরেজি জানতেন বলে তাকে এই গুরু দায়িত্বটি দেয়া হয় । সেই  সময় তাঁর লেখাগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পত্রিকায় প্রকাশ হয়, যা আমাদের  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিরাট সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে । স্বাধীন বাংলা  বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর রণাঙ্গনের খবর জাতিকে সাহস যোগাতো । এ ছাড়া  বিবিসি/ভোয়া/আকাশ বানী /জার্মান বেতারে প্রচারিত হতো নিয়মিত । বিভিন্ন  গোপনীয় কাজে আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে বিভিন্ন দেশে পাঠাতেন, মুক্তিযুদ্ধে  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্বটি পালন করেছেন একজন  খাঁটি কুটনৈতিকের মতো ।

 উল্লেখ্য, এর আগে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে  কিছু দিন শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করেছিলেন । আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আলী আশরাফ  একজন অগ্র সৈনিক ছিলেন । ‘বাংলাদেশ উইনস ফ্রিডম ‘গ্রন্থে তাঁর বিস্তারিত  উল্লেখ আছে । আজকের অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফকে এ পর্যায়ে আসতে বহু চড়াই উৎরাই  পেরুতে হয়েছে। শৈশবে পিতৃহারা আশরাফ এখানে এসেছেন তাঁর মায়ের হাত ধরে । মা  জননী আজকের আশরাফ তৈরি করতে সাহসী ভুমিকা রেখেছেন । গল্লাইর অজপাড়া গাঁ  থেকে উঠে এসে জাতীয় নেতায় পরিচিত হওয়া নিশ্চয়ই চাট্টে খানি কথা নয় । তাঁর  শৈশব কৈশোর আমাদের দেখার কথা নয় । ওনার মুখ থেকে শুনা ওনার মায়ের কথা  জেনেছি । ওনি বরাবরই মায়ের আদেশ নির্দেশ পালন করতেন । সেই মহিয়সী নারী তাঁর  রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন । এরশাদ সরকারের পাট মন্ত্রী  আব্দুস সাত্তার মা জননী এর কাছে এসে ছেলেকে মন্ত্রী হবার প্রস্তাব দিয়ে ছিল  । তিনি বলেছিলেন আমার ছেলে আশরাফের মাথায় বঙ্গবন্ধু হাত বুলিয়েছেন। আমাকে  বঙ্গবন্ধু বোন ডেকেছেন ,আমার ছেলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে যাবে না । আমি  দোয়া করছি আমার ছেলের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়বেই । হ্যাঁ মায়ের আশীর্বাদে  আলী আশরাফের গাড়িতে পতাকা উড়েছিল সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে। এক জন আলী  আশরাফ এক জীবনে অনেক পেয়েছেন, চান্দিনার আপাময় জনতা তাকে অনেক দিয়েছেন ।  তিনিও চান্দিনার মানুষকে উজাড় করে দিয়েছেন । চান্দিনার মানুষের ভালবাসার ঋণ  তিনি প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়া শোধ করবেন ,বঙ্গবন্ধুর মতো এটাই তাঁর  অঙ্গীকার । ভাল থাকুন জনেনেতা আলী আশরাফ । শান্তিতে থাকুক চান্দিনার সকল  জনতা ।

Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker