চান্দিনা

চান্দিনায় বেড়েছে শীত;শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্নের পরামর্শ

চান্দিনায় বেড়েছে শীত;শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্নের পরামর্শ

 

।। মাসুমুর রহমান মাসুদ।।

 

কুমিল্লার চান্দিনায় কয়েকদিনের টানা শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রেকর্ডপরিমাণ তাপমাত্রা হ্রাসে বিরূপ প্রভাব লক্ষ করা গেছে। টানা ৪৮ ঘন্টায় এ জেলায় সূর্যের দেখা মেলেনি। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়েছে শ্রমজীবি মানুষ। প্রয়োজনের বাহিরে কেউ ঘর থেকেই বের হচ্ছে না। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের আপ্রাণ চেষ্টা করছে সহায়-সম্বলহীন মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

 

কয়েক দিনের কুয়াশার পর হঠাৎ বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। দিনের বেলায় সূর্য্যরে আলো ভূ-পৃষ্ঠে না পৌঁছায় এবং দিন ও রাতে সমান তালে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম কোণের হিমেল হাওয়ায় প্রাণীকূলে শৈত্যপ্রবাহের ন্যয় ঠেঁকছে।

 

এদিকে, শীতের তীব্রতায় অসহায় হয়ে পড়েছে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর শ্রমজীবী মানুষ। কর্মের তাগিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে বেশ বেকায়দায় পড়ছে তারা। যারাই ঘর থেকে বের হচ্ছেন তাদের সকলেরই গায়েই ছিল ভারী গরম কাপড়। শীতের তীব্রতায় এবং হিমেল হাওয়ায় তাতেও যেন শীত নিবারণ হচ্ছে না। অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষ দিনের বেলায়ও খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

 

পৌরসভার কচুয়ারপাড় গ্রামের কৃষক আনোয়ার জানান, ঠান্ডা বেশি। কৃষি জমিতে কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।

 

বেলাশ্বর গ্রামের রিক্সা চালক আমির হোসেন বলেন, উত্তরে বাতাসের কারণে শীত বেশি লাগছে। রিক্সা চালাতে গেলে হাত পা বরফ হয়ে যায়।

 

অপরদিকে, পৌষের ওই হাড়কাঁপানো শীতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের এমন তীব্রতা থাকলে জেলা জুড়ে হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডা জণিত সমস্যায় শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

এব্যাপারে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সুফিল আহম্মেদ মায়েদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, শিশুদের  প্রতি অধিক যত্ন নিতে হবে। কোন শিশু যাতে খালে পায়ে না থাকে, ঘরের বাহিরে না যায়, রাতে ঘুমানোর সময় লেপ বা কম্বলের নিচ থেকে বাহির না হয়। বাহিরে বের হলে ভালোভাবে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শীতের পোষাক পরিয়ে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করতে হবে। কক্ষে ধূমপান করা বা ধুয়া যেনো না থাকে। ৬ মাস পর্যন্ত বুকের দুধ নিশ্চিত করতে হবে। ঠান্ডা এবং বাসি খাবার শিশুদের খাওয়ানো যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান জনান, শীত বেড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধ সহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পর্যাপ্ত শীতের কাপড় পরিধান করতে হবে। তিনি আরও জানান, চান্দিনায় এখনো ঠান্ডা জনিত রোগের তীব্রতা দেখা দেয়নি। হাসপাতালে স্বাভাবিক দিনের মতোই রোগী আসছে।

Close