জাতীয়

মোরশেদ খানের চিকিৎসার জন্য ভাড়া বিমানে লন্ডন যাওয়া নিয়ে আইনজীবীদের নানামত

মোরশেদ খানের চিকিৎসার জন্য ভাড়া বিমানে লন্ডন যাওয়া নিয়ে আইনজীবীদের নানামত

মোরশেদ খান কোন আদেশের বলে বিদেশে গেলেন বা আদৌ তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নিতে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় পুলিশ সদর দফতরে। সেখান থেকে জানানো হয়, মোরশেদ খানের বিদেশযাত্রা নিয়ে আদালতের কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। উল্টো তার বিদেশযাত্রা ও বাংলাদেশে প্রবেশে কোনও বাধা না দেওয়ার ব্যাপারে আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে।

 

ইমিগ্রেশন পুলিশের বরাত দিয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, মোরশেদ খানের বিদেশযাত্রায় কোনও বাধা না দেওয়ার ব্যাপারে আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিল।

একই কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি বলেন, কারও বিদেশযাত্রায় আদালতের কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকলে তিনি যেতে পারেন। তবে দুদক বা যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা আদালতে কারও বিদেশযাত্রায় কোনও এমবার্গো (নিষেধাজ্ঞা) যদি চেয়ে থাকে এবং সেটা যদি কোর্টের প্রপার ওয়ে হয়ে ইমিগ্রেশনে যায় এবং এরপর কেউ বিদেশযাত্রা করেন তাহলে নিঃসন্দেহে এটি একটি বেআইনি কাজ। কিন্তু আদালতের যদি নিষেধাজ্ঞা না থাকে তাহলে দেশত্যাগে কোনও বাধা থাকার কথা না।

 

এদিকে মোরশেদ খানের আইনজীবী খাইরুল ইসলাম চৌধুরী ওই বিবৃতিতে বলেন, দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতের একটি রিট করা হয়েছিল মোরশেদ খান ও নাসরিন খানের পক্ষে। তখন মোরশেদ খান ও নাসরিন খানকে দেশত্যাগ বা দেশে প্রবেশে কোনও বাধা না দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব, ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসার ইনচার্জ (ইমিগ্রেশন) কে নির্দেশনা দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এরপর দুজন বহুবার দেশের বাইরে গিয়েছেন ও ফিরে এসেছেন। তখন কোনও কর্তৃপক্ষ তাদের ভ্রমণে বাধা দেয়নি। কিন্তু এবার ২৮ মে চিকিৎসার জন্য দুজনের দেশত্যাগ করার পর দুদকের একজন আইনজীবী মিডিয়াতে বলেছেন, মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী আদালতের যথাযথ অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগ করেছেন। এই বক্তব্য ইনকারেক্ট এবং মিসকনসিভড।

 

তবে উচ্চ আদালতের আদেশ থাকলেও সেটি যে ভিন্ন মামলায় দেওয়া সে বিষয়টি জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। মঙ্গলবার (২ জুন) সন্ধ্যায় বলেন, ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতে যে অর্ডার (আদেশ) হয়েছিল তাতে দুদককে পক্ষ করা হয়নি। দুদক এ বিষয়ে অবগত না। বরং এবি ব্যাংকের মহাখালী শাখা থেকে ৩৮৩ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার ৩৬৩ টাকা আত্মসাতের মামলায় মোরশেদ খান যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সেজন্য ২০১৯ সালের ১০ জুন ও ২০২০ সালের ২৬ মে দুদক দুটি ব্লকেড অর্ডার দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশকে। সর্বশেষ ব্লকেড অর্ডারটি ২৮ মে তিনি দেশত্যাগের আগেই ইমিগ্রেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

দুদক আইনজীবীর প্রশ্ন, ব্লকড অর্ডারের বিষয়টি ইমিগ্রেশন জানা সত্ত্বেও তিনি কীভাবে দেশ ছাড়লেন? এছাড়া তিনি মানি লন্ডারিং এর মামলায় জামিন নিয়েছিলেন। যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন সেখানে একটা ইন্টিমিশন দেওয়া উচিত ছিল। তা মোরশেদ খানের পক্ষ থেকে করা হয়নি বলে জানান তিনি।

Close