জাতীয়লাইফস্টাইল

এলজিইডি অফিসের হিসাব রক্ষকের স্ত্রীর ১০ কোটি টাকার সম্পদ

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার এলজিইডি অফিসের হিসাবরক্ষক কাজী আবু হাফিজ ফসিউদ্দীন দূর্ণীতির মাধ্যমে গৃহিনী স্ত্রীর নামে করেছেন ১০ কোটির ও বেশী টাকার সম্পদ। সম্পদ যা করেছেন তার সবটুকুই স্ত্রী রেহেনা খাতুনের নামে। নিজের নামে কিছুই নেই বলে জানান, এই হিসাবরক্ষক নিজেই।সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়া আবাসিক এলাকায় পাঁচ তলা বাড়ি, আমতলা ভকেশনাল স্কুলের পাশে কোটি টাকা মূল্যের জমি, কালিগজ্ঞের কুশোলিয়া এলাকায় আরও দুই বিঘা জমি, সাতক্ষীরা আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট, ১৫ লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার সবটাই তার স্ত্রীর। শহরে বাড়ির তৈরীর ৫ কাঁটা জমিও স্ত্রী রেহেনা খাতুনের নামে কিনেছেন হিসাব রক্ষক ফসিউদ্দীন।এসব বিষয়গুলো স্বীকার করে হিসাব রক্ষক কাজী আবু হাফিজ ফসিউদ্দীন বলেন – আমার কিছুই নেই, সব স্ত্রীর। তবে এগুলো সব আমার শ্বশুর আমাকে পণ হিসেবে দিয়েছেন।এদিকে শ্বশুর শহরের আমতলা এলাকার জেডএস ফার্মেসীর পরিচালক জব্বার সরদার বলেন, আমি জামাইকে কিছুই দেয়নি। এসব তার অফিসের ব্যাপার। আমি কিছু জানি না।অন্যদিকে সব সম্পত্তির মালিক ওই হিসাব রক্ষকের স্ত্রী রেহেনা খাতুন বলেন, সব আমার বাবা দিয়েছে। আপনার বাবা কিছুই দেয়নি জানিয়েছেন, এখন কি বলবেন। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের ঝামেলায় যেতে চাই না। এসব বাদ দেন।জানা গেছে, কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেও হিসাব রক্ষক কাজী আবু হাফিজ ফসিউদ্দীনের স্ত্রী রেহেনা খাতুনের আয়ের কোন বৈধ উৎস নেই। ১৯৮৯ সালে সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কুশোলিয়া গ্রামের মৃত শফিউদ্দীনের ছেলে কাজী আবু হাফিজ ফসিউদ্দীন এলজিইডিতে কর্মরত হন। এরপর আমতলা মোড়ের জেডএস ফার্মেসীর স্বত্ত্বাধিকারী জব্বার সরদারের তালাকপ্রাপ্ত মেয়ে রেহানা খাতুনকে বিয়ে করেন ফসিউদ্দীন।উত্তর কাটিয়া এলাকার ব্যবসায়ী ও ওই হিসাব রক্ষকের প্রতিবেশী আবেদার রহমান জানান, হিসাব রক্ষক কাজী ফসিউদ্দীনের স্ত্রী রেহেনা খাতুন একজন গৃহিনী, কিছুই করেন না। এদিকে, দশ কোটি টাকারও বেশী সম্পদের মালিক তিনি। কিভাবে কিছু না করেও এত সম্পদশালী হওয়া যায় বোধগম্য নয়। তবে তার স্বামী কাজী ফসিউদ্দীন ঘুষ দূর্ণীতির মাধ্যমে এসব গড়েছেন স্ত্রীর নামে। জেনেছি ঘুষ ছাড়া তিনি কোন ফাইলে স্বাক্ষর করেন না।একজন গৃহিনী হয়েও দশ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক রেহেনা খাতুনের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন সাতক্ষীরার উপ কর কমিশনার কার্যালয়-১৩।অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শহরের উত্তর কাটিয়া আবাসিক এলাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আলিশান বাড়ি, বাড়ী তৈরীর জমিটিও স্ত্রীর, আমতলা মোড়ে ভোকেশনাল পাশে জমি, কালীগঞ্জ উপজেলার কুশলীয়ায় গ্রামে আরও দুই বিঘা জমি, সবটাই স্ত্রীর নামে ক্রয় করা। রয়েছে ১৫ লক্ষাধিক টাকার অধিক স্বর্ণালংকর। এছাড়া সাতক্ষীরা আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকে স্ত্রী ও তিন সন্তানদের নামে ব্যাংক একাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে।এসব বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে সাতক্ষীরার উপ কর কমিশনার-১৩ সার্কেলের তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, তদন্ত অব্যহত রয়েছে। হিসাব রক্ষক ফসিউদ্দীনের স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী ও আয়ের কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র:সময়ের কণ্ঠস্বর

Close