চান্দিনা

চান্দিনায় হকারদের দখলে ফুটপাত;ভোগান্তিতে শিক্ষার্থী ও পথচারীরা

চান্দিনায় হকারদের দখলে ফুটপাত;ভোগান্তিতে শিক্ষার্থী ও পথচারীরা

 

আকিবুল ইসলাম হারেছ,চান্দিনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

 

 

পায়ে চলার পথ হকার ও ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যাওয়ায় চাঁদের আলো খ্যাত চান্দিনার সৌন্দর্যহানি ঘটছে। আর ফুটপাত বেদখল হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে পথচারীদের।

 

রাস্তা ও ফুটপাত বেদখল করে অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মাণ এবং যত্রতত্র বাজার বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও শহরের পৌরসভা এলাকা এবং পৌরসভার দেয়াল ঘেঁষে ময়লা আবর্জনার স্তূপ জমে গেছে। 

 

এসব পৌর কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করছে। পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশ না হলে প্রশাসন থেকেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

 

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দু’পাশে সারি সারি দোকানঘর নির্মাণ, বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান বসানো এবং রাস্তার পাশে সারি সারি সিএনজি অটোরিকশার দাঁড়িয়ে থাকার কারণে নিত্য যানজটে দুর্বিসহ এলাকাবাসী।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ স্থাপনা আর তাদের কাছে থেকে প্রতিদিন গুনছেন হাজার হাজার টাকার চাঁদা। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী থেকে শুরু করে চান্দিনায় বেড়াতে আশা বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

 

তাছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ চান্দিনা বাজারের উপর দিয়ে চলাচলকারী সড়ক সিএনজি, ইজিবাইক, অটোরিকশা পার্কিং যানজট সৃষ্টি করছে বেশি। ফলে ব্যবসায়ী ও রোগীসহ সাধারণ যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি।

 

চান্দিনা শহরতলী এলাকাবাসী মো. আরমান বলেন, ফুটপাত দখলে থাকায় আমাদের রাস্তার মাঝ দিয়ে হাঁটাচলা করতে হয়। ফুটপাত দখলমুক্ত করলে আমরা ফুটপাত ব্যবহার করে হাঁটাচলা করতে পারতাম।

 

স্টেশন রোডস্থ এক পথচারী পৌরশহরের মাছ বাজার এলাকার ময়লা আর্বজনা আর দু’পাশ দখল করে রাখা ফুটপাতের ওপর অস্থায়ী দোকানপাট মূল সমস্যা বলে জানান।

 

ঢাকা থেকে বেড়াতে আশা এক ব্যক্তি বলেন, আগে শুনেছিলাম চান্দিনা নাকি খুবই সুন্দর এলাকা। কিন্তু বাস থেকে নেমে রাস্তাঘাট এমনকি চলাচলের জন্য কোনো ফুটপাত চোখে পড়েনি। আমাকে উপজেলার পিছনে ময়লার দুর্গন্ধযুক্ত রাস্তা নাকে হাত দিয়ে আসতে হলো।

 

এ দিকে চান্দিনার মাধাইয়া বাজারের ফুটপাত হকারের দখলের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পথচারীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।ফুটপাত এখন শুধু শিক্ষার্থী নয় সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার উপায় নেই। উচ্ছেদ অভিযানের পর আবার এসব সড়কের ফুটপাত হকার ও তরকারি বিক্রেতা, মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীদের দখলে থাকে। যার কারণে বাজারের পথচারীদের চলাচলের রাস্তাগুলো দিয়ে মাধাইয়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ,মাধাইয়া ছাদিম উচ্চ বিদ্যালয়,মাধাইয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,৫/৭টি ব্যাংক ও মাল্টিপারপাস ক্ষুদ্রঋণ ও সঞ্চয়ের শত শত গ্রাহকসহ দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষও। এসব সড়কের দু’ পাশের ফুটপাত এমনকি মূল সড়কের দু’ পাশে রিক্সা ভ্যানে করে ভ্রাম্যমাণ দোকানী ও হকাররা বিক্রি করে তরকারি, চটপটি, হালিম, পেঁয়াজু, বুট-মুড়ি, জুতা স্যান্ডেল, মৌসুমী ফলফলাদি ইত্যাদি।

 

মাধাইয়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষ ও ডিগ্রি ২য় বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, মাঝেমধ্যে এসব দোকান উচ্ছেদ করলেও পরবর্তীতে পূর্বের

অবস্থায় ফিরে যায়। এতে করে পথচারীদের চলাচলের পথ ঘেঁষে সড়কটি হকারদের ভ্যান গাড়ির দখলে থাকায় বিশেষ করে আমরা ছাত্রীরা যাতায়ত করতে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়। কারণ আমরা তো মহাসড়কের উপর দিয়ে চলাচল করতে পারি না। 

 

মাধাইয়া ছাদিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম,৮ম,৯ম শ্রেণির ছাত্রীরা জানান, আমরা প্রতিদিনই স্কুলে আসতে আর যেতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। আর যেদিন বাজার বসে সেদিন তো আরো বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় যে হাটাচলাও করা যায় না, আমরা ছাত্রীরা বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়। এ সুযোগে বেশ কিছু বখাটে পথের মধ্যে দাড়িয়ে থেকে আমাদের গায়ের সাথে ধাক্কা খেতে চায়। যখন অভিযান চালিয়ে তাদের কে উচ্ছেদ করা হয় তখন তেমন সমস্যায় পড়তে হয় না।

 

শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ মনে করেন,

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান

পরিচালনা করলে ফুটপাতগুলো সচল রাখা সম্ভব। তাদের দাবি, অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করা হোক।

 

পরিশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সুনজর কামনা করেছেন মাধাইয়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ ও মাধাইয়া ছাদিম উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রী ও শিক্ষিত সচেতন মহল।

 

    

Close