জাতীয়

চান্দিনায় ট্রাক্টরের বেপরোয়া ভাবে চলাচলে আঞ্চলিক সড়কগুলোর বেহাল দশা ?

চান্দিনায় ট্রাক্টরের বেপরোয়া ভাবে চলাচলে আঞ্চলিক সড়কগুলোর বেহাল দশা ?

 

 

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ছোটবড় সকল সড়কে অবৈধ ট্রাক্টর বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা- সড়কে ঝরে পড়ছে তরতাজা প্রাণ। অনিয়মতান্ত্রিক এবং অবৈধ এ যানের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় ট্রাক্টরগুলো বেপরোয়াভাবে সড়কে চলাচল করছে। গ্রামের সড়ক ছাড়াও অভ্যন্তরীন মহাসড়ক ও উপজেলা সড়কে চলছে নির্বিঘ্নে। স্থানীয় সড়কে দুর্ঘটনা রোধ করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সচেতন মহল।

 

আইনের তোয়াক্কা না করে অবাধে বিচরণ করা ট্রাক্টরগুলোর ব্যাপারে কোন মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।প্রতিদিন উপজেলার অন্তত ১২-১৫টি পয়েন্টে মাটি সরবরাহের কাজ চলছে। প্রতিটি পয়েন্টেই মাটি সরবরাহে রাস্তা থেকে জমিতে ট্রাক্টর উঠা-নামার জন্য রাস্তার সোল্ডার সহ পাকা অংশ কেটে ঢালু করা হচ্ছে।মাটি সরবরাহ শেষ হলেও ওই স্থানটি আর সংস্কার করা হয় না। সেগুলো সংস্কারের জন্য সরকারি বরাদ্দের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এমনকি সড়কে চলাচলরত যানবাহন চালক ও পথচারীদের। মাটি সরবরাহে ট্রাক্টর উঠা-নামায় ওই স্থানটি যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে সরকার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের জনপদের উন্নয়নে রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, সলিং ও পাকা করণসহ সংস্কার কাজ চালিয়ে গেলেও মাটি খেকো এক শ্রেণির দস্যুদের কবলে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে সেই সব সরকারি সড়কগুলো।

 

এছাড়াও উপজেলার: পানিপাড়া,ভোমরকান্দি,করতলা,নবাবপুর, গল্লাই,কংগাই,সুহিলপুর,হোসেনপুর,রসুলপুর,মেহার,  মহিচাইল,বাড়েরা,বাতাবাড়িয়া,বড় কলাগাও,কেড়নখাল সহ এলাকায় রাস্তাঘাট মেরামতের পরেই দুই একমাসের মধ্যে হয়ে উঠে মরণফাঁদ। স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী সহ জনসাধারণের চলাচল করতে হচ্ছে এই দানব ট্রাক্টরের আতঙ্কে।

 

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার কয়েকটি এলাকার ইট ভাটাগুলো পুরোদমে উৎপাদনে আসার ফলে বেপরোয়া ট্রাক্টরগুলোর চাহিদা বছরের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন অত্যধিক। আর সে সুযোগেই এখানকার প্রায় প্রতিটি সড়কেই তারা অবাধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি তাদের বেপরোয়া গতি জনমনে ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে জীবনহানির মত মারাত্মক দুর্ঘটনা।

 

জানা যায়,কৃষি জমি চাষাবাদে গরুর লাঙ্গলের বিকল্প হিসেবে প্রায় তিন দশক পূর্বে সারা দেশের ন্যায় চান্দিনা উপজেলায় আবির্ভাব ঘটে ট্রাক্টর নামক যান্ত্রিক লাঙ্গলের। কিন্তু সে কৃষি ট্রাক্টরগুলোর ব্যবহার মাঠের জমিতে খুব একটা বেশিদিন টিকেনি। অবৈধ এসব ট্রাক্টরগুলো আবাদি জমি ছেড়ে স্থান করে নিয়েছে উপজেলার গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং বাজার কেন্দ্রিক সড়কগুলোতে।

 

চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টরগুলো পরিবহণে রূপান্তরের পর থেকেই গ্রামীণ জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। যদিও তা মাত্রায় ছিল সহনশীল। কিন্তু সময়ের ব্যাবধানে চাহিদা মেটাতে ট্রাকের চেয়ে ট্রাক্টরের ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ার কারনে যেই মাত্র তার সংখ্যাটা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক তখনি তা জনসাধারণের কাছে এক ভয়ংকর দানবে পরিণত হয়েছে এসব ট্রাক্টর। এসব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে নষ্ট হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাকা রাস্তা। গ্রামের মেঠোপথের মাটি আলগা হয়ে তা পরিণত হচ্ছে ধুলোবালিতে। বেপরোয়া গতি ও কানফাটা আওয়াজে চলাচলকারী ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ জনপদে বাড়ছে শব্দ দূষণ। ব্যাহত হচ্ছে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাক্টর যারা চালায় তাদের অনেকের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এসব চালকদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স। হাতেগোনা কয়েকদিন পুরনো চালকদের সঙ্গে থেকে নামমাত্র নেয়া প্রশিক্ষণই তাদের মূল পুঁজি। এরপরই তারা চলে আসে চালকের ভূমিকায়। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত না হওয়া এবং অনেক ক্ষেত্রে জেনেও না মানায় তাদের দ্বারা অনেক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন ভোরের আলো ফুটতেই উপজেলার সবকটি সড়কেই চলে এ যন্ত্রদানবের অবাধ বিচরণ। ফলে এ সড়কগুলোর অবস্থা বছরের বেশিরভাগ সময়ই অন্যান্য সড়কগুলোর তুলনায় বেশি জরাজীর্ণ থাকে এবং এদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। এসব ট্রাক্টরগুলোর বেপরোয়া অবাধ চলাচল বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

 

চান্দিনা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম সুমন বলেন,”উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের জনবহুল এলাকা রামমোহন বাজার হতে ঝলম রোডে পানিপাড়া গ্রাম ও রামমোহন হতে মনারটং রোডের ভোমরকান্দি গ্রামের হাজার হাজার জনতা, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী যেন ট্রাক্টর চালকদের হাতে জিম্মি।হাতে গুণা ২/৩ জন অবৈধ পলি মাটি ব্যবসায়ী ও অবৈধ ইটভাটার ধূলা-বালি শব্দ দূষণের দুঃসহ যন্ত্রণার অসভ্যতায়, রাস্তাঘাট ধ্বংস করে এই

Close