চান্দিনা

চান্দিনায় ক্রেতা শূন্য সামাজিক দূরত্বের নিরাপদ বাজারে: অধিকাংশ ব্যবসায়ী ফিরে গেছেন আগের স্থানে

চান্দিনায় ক্রেতা শূন্য সামাজিক দূরত্বের নিরাপদ বাজারে: অধিকাংশ ব্যবসায়ী ফিরে গেছেন আগের স্থানে

 

।। মো. আবদুল বাতেন।।

 

চান্দিনায় ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে সামাজিক দূরত্বের নিরাপদ বাজারে। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লার চান্দিনায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজ মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার।

 

লকডাউন চলাকালিন সময়ে উপজেলার ১১টি মাঠে সরকারি নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার চলে। আর লকডাউন শিথিল হওয়ার সাথে সাথে ব্যবসায়ীরা তাদের পূর্বের স্থানে ফিরে যাচ্ছে। যেসব ব্যবসায়ীরা সরকারি বিধি মেনে এখনও স্থানান্তরিত স্থানে ব্যবসা চালাচ্ছে তাদের ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- চান্দিনা বাজারের মাছ-মুরগী, শুটকি, শাক-সবজি, পেয়াজ-রসুনের বাজার স্থানাস্তর করে চান্দিনা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থাপন করা হয়। বিশাল ওই মাঠে ৫ সারিতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা শুরু করলেও পরবর্তীতে ১/২টি করে করে ব্যবসায়ীরা তাদের পূর্বের স্থানে ফিরে যায়। ক্রমশই ফাঁকা হয়ে পড়ে পুরো মাঠে। বর্তমানে ২টি সারি থাকলেও তারমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী তাদের দোকান বন্ধ রেখে বাজারে ফিরে গেছে।

 

বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান- চার শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা স্কুল মাঠে সামাজিক দূরত্বের বাজারে দোকান এনেছিল। এখন চার ভাগের তিন ভাগই ফিরে গেছে বাজারে। আর ক্রেতারা বাজারে সব কিছু পায় বিধায় এখন মাঠে কেউ আসে না।

 

মুরগী ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান- এ মাঠে ১১টি মুরগী দোকান ছিল। এখন আছে মাত্র ৪টি। যেখানে প্রতিদিন শতশত মুরগী বিক্রি করতাম এখন প্রতিদিন ৪-৫টি মুরগী বিক্রি করছি। প্রশাসন বিকাল ৪টার পর বাজারে অভিযান চালায় ততক্ষণে সব দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। এখান থেকে যেসব ব্যবসায়ীরা বাজারে ফিরে গিয়ে ব্যবসা করছে তারা দেদারছে ব্যবসা পরিচালনা করছে। আর আমরা যারা এখানে পরে আছি আমাদের কাছে কোন ক্রেতা আসে না!

 

উপজেলার মহিচাইল এলাকার সচেতন নাগরিক নূরুল ইসলাম জানান- করোনা ভাইরাসের সংক্রামন রোধে সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে মহিচাইল বাজারের কাঁচামাল ও মাছ-বাজার স্থানান্তর করে মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থাপন করা হয়েছিল। ঈদের পর থেকে বিলুপ্ত হয় মহিচাইল স্কুল মাঠের সামাজিক দূরত্বের বাজারটি। এখন আগের মতোই চলছে সকল কার্যক্রম।

 

মাধাইয়া বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান- সামাজিক দূরত্বের কাঁচাবাজারে এখন কেউ নেই। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকায় ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উদাসিনতার অভাবে স্থানান্তরিত বাজারটি এখন সম্পূর্ণ ফাঁকা। সকল ব্যবসায়ীরাই এখন পূর্বের স্থানে ফিরে এসেছে।

 

উপজেলার নবাবপুর বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ জানান- গত ৩/৪দিন পূর্বে মাঠের সকল ব্যবসায়ীরা বাজারের পূর্বের স্থানে চলে এসেছে। নবাবপুর বাজারের সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই বললেই চলে।

 

এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নেহাশীষ দাশ জানান- আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইন অমান্যকারীদের জরিমানা আদায় করছি। এছাড়া প্রতিটি বাজার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার স্থানান্তরিত স্থানে রাখার আহবান জানাচ্ছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Close