তথ্য প্রযুক্তি

মেহেদী হাসান রনির তিনটি কবিতা

মেহেদী হাসান রনির তিনটি কবিতা

ধানমন্ডি-৩২ লেখকঃ মেহেদী হাসান রনি

ধানমন্ডি-৩২ এ কেমন বঙ্গবন্ধু জাদুঘর!!!

দেয়ালের দিকে তাকালে কেপে উঠে বুক থরথর,

সিড়ির দিকটা আরও ভয়ংকর

স্বাক্ষি দেয় তারা কতটা নির্মম ছিল

ঘাতকের হুষ্কার ।।।

ধানমন্ডি-৩২

এ কেমন বঙ্গবন্ধু জাদুঘর!!!

চারপাশ কেমন জানি নিরব-নিথর

তার মাঝ থেকে ভেসে আসে,

ছোট্র এক শিশুর চিৎকার,

মেরোনা আমায় মায়ের কাছে যেতে দাও…!!!

ধানমন্ডি-৩২

এ কেমন বঙ্গবন্ধু জাদুঘর!!!

যেখানে গেলে দু’চোখ ছলোছল,

ব্যাকুল হৃদয়ে জেগে উঠে কত প্রশ্ন!!

যেখানে ঠুকরে কেধে ওঠে মন,

তবু পায়না জেগে উঠা মনের…

প্রশ্নের সমাধান……….!!!

ধানমন্ডি-৩২

এ কেমন বঙ্গবন্ধু জাদুঘর!!!

যা বহন করে শুধু কষ্টের চৃতি

আর স্বজন হারানোর দায় ভার।

————————————————

বাঙালী ছেলে

– মেহেদী হাসান রনি

চিনতে পারো নি মোরে!

আমি যে বাঙালী সূর্যসন্তান,

কি করে তা ভুলে গেলে!

কি করে ভুললে ৫২-তেও

গুলি খেয়ে মরি নাই,

বুকে গুলি আর মুখে রক্ত

তবু মোরা দমি নাই;

দমে যাই নাই,অধিকারগুলো

অকপটে চেয়ে গেছি,

তোমরা ভেবেছো,” সেদিনের ছেলে,

আজ আমি বদলে গেছি!”

ভাষার স্বপ্ন সত্যি করেছি,

স্বাধীন করেছি দেশ,

আর আজ ভাবছো সেই সে চেতনা

করে দিবে নিঃশ্বেষ!

মাকে ভালবেসে হাসিমুখে আমি

দিয়েছি আমার প্রাণ,

ভেবেছো-“এটাতো আদ্দিকালের কথা,

আজ হয়ে গেছে ম্লান।“

সাধেতো মায়ের গর্বের ছেলে

হয়ে উঠিনি আমি,

কিভাবে আঁধার জয় করে নেব

সে পথটা আমি জানি।

বুক চিড়ে দেখ রক্তের নদী

আজও টগবগ ফোটে

মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেই মোরা

দু’চোখ আকাশে ছোটে।

ছুটে চলি মোরা রক্তে

স্বাধীন দেশের গন্ধ নিয়ে,

কবির লেখনি পড়ে দেখ তুমি,

পড়ে দেখ মন দিয়ে;

তেরো শত নদী আজও জিজ্ঞাসে-

“কোথাকার ছেলে তুমি?”

স্বাধীন পতাকা হাতে নিয়ে বলি,

“বাংলা আমার ভূমি।”

মায়ের আঁচলে যে টান দিয়েছে,

তার হাতই ভেঙে দেই

তবু আজও তুমি চিনতে পারো নি,

সেদিনের আমাকেই।

বুকে ভালবাসা, বিজয়ের নেশা,

ঘামে ছোটে খুন বিন্দু

হাতের মুষ্ঠি চেপে ধরে থাকে

অত্যাচারীর মুণ্ডু।

আজ আমি আবার মাথা উঁচু করে

তোমার সমুখে দাঁড়িয়ে

নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করবো ,

সকল বাঁধন ছাড়িয়ে।

যতদিন রগে বইবে মোদের

বাঙালী মায়ের রক্ত,

ভুলেও ভুলোনা,

আমরা তো এই স্বাধীন দেশেরই ভক্ত।

—————————————————–

 

সে পথ মিশেছে কি বাংলাদেশ।

লেখকঃ মেহেদী হাসান রনি

 

মুক্তির ঠিকানা কতদুর জানা নেই,

ক্রাচে ভর করে হাটা এই মুক্তিযোদ্ধার

সোনাডাংগার পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদী,

দু ‘পাড়ে ভাঙ্গনের চিন্হ রেখে তার ধেয়ে চলা

ঘাস সবুজ গাছালি বুলবুলি আর দোয়েলের শিশে

জাগে দিন রাত্রী,অপুর্ণতার সানকি ভাংগা চুলোয়

আজ কি রান্না হবে জানেনা।

 

একদিন এই ভাতের থালা ঠেলে দিয়ে

মায়ের আঁচলে মুখ মুছে রনাঙ্গনের পথ ধরেছিল সে

‘কন্ঠে তার জেগেছিল ‘জয় বাংলা,

আর ছিল মহান মুজিবের ‘০৭-ই মার্চের ভাষন।

“আর যদি একটি গুলি চলে,আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে অনুরোধ রইলো,

প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল,”

“এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”

অত:পর একটি ইতিহাস,

একটি দেশ বাংলাদেশ,একটি পতাকা,

৩০লক্ষ মানুষ,বিশাল রক্তগঙ্গা পেরিয়ে,

দু’লক্ষ সম্ভ্রম হারানোর গুমরে কান্নায়,

রবী ঠাকুর জেগে উঠে,

আমাদের প্রানের চেতনায়

“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’

পাখির ঠোঁটে দোয়েলের শিসে এখনো জেগে আছে

বয়ে য়াওয়া রক্তের স্রোতে, পদ্মা-মেঘনা- যমুনা,ধলেশ্বরী।

 

ক্রাচে ভর করে হাটা মুক্তিযোদ্ধা হোঁচট খেয়ে

নিজকে সামলে নিয়ে আবার চলে পথ,

চলতে চলতে এখনো সে হারায়নি পথ,

কত পথ চলার পরে খুঁজে পাবে সে পথ?

যে পথে হারিয়েছে সে একাত্তরে

সে পথ মিশেছে কি বাংলাদেশে?

Close