জাতীয়নারী ও শিশু

পরকীয়া প্রেমের বিয়ে! স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় স্বামী!

পরকীয়া প্রেমের বিয়ে! স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় স্বামী!

 

চান্দিনার সময় ডেস্ক ● ‘ওসি সাহেব আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’ স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় গিয়ে ঘাতক স্বামীর এমন স্বীকারোক্তিতে অনেকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় বনে যান থানার ওসি। দায়িত্বরতদের ডেকে বলেন, ‘এই লোক কি পাগল নাকি সত্যি বলছে’।

 

পরে ওসির নির্দেশে ঘটনা যাচাইয়ে খুনির বাড়ির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী পুলিশ পাঠিয়ে জানা যায় সত্যিই তিনি তার স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় এসেছে আত্মসমর্পণ করতে।

 

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায়। হত্যার শিকার স্ত্রী আফরিন আক্তার রীনা(২৩) নাটোর জেলার বাদীপাড়া থানার সাবদিয়া গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে। আর ঘাতক স্বামী মেহেদী হাসান মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার নিজামউদ্দিনের ছেলে।

 

ঘাতক স্বামী মেহেদীর বরাত দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি এস এম মঞ্জুর কাদের জানান, ঘাতক মেহেদী হাসান(২৭) ও নিহত স্ত্রী আফরিন আক্তার(২৩) রীনা দুজনেরই পূর্বে বিবাহিত ছিলেন। দুজনেরই আগের সংসারে সন্তান রয়েছে।মেহেদী ও আফরিন ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকার একটি হোসিয়ারিতে একইসঙ্গে কাজ করার সময় পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে প্রায় দুই বছর আগে তারা দুজনেই আগের সংসারে তালাক নিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।

 

বিয়ের পর স্বামী মেহেদী তার মা জোছনা বেগম, বাবা নিজামউদ্দিন ও স্ত্রী রীনাকে নিয়ে পঞ্চবটি চাঁদনী হাইজিংয়ের ওমর ফারুকের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বসবাস শুরু করেন। এরই মধ্যে দুজনের সংসারে তৌহিদ নামে একটি ছেলে শিশু জন্ম নেয়। বর্তমানে তৌহিদের বয়স ৫।হত্যার শিকার রীনার পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি আরো জানান, বিয়ের পর স্বামী মেহেদীকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ দেয় রীনার পরিবার। এই টাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই সময় স্ত্রী রানী মেহেদীকে টাকার খোটা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেহেদী গামছা দিয়ে রীনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।পরের দিন শুক্রবার সকালে ঘাতক মেহেদী তার মা জোসনা বেগমকে জানান যে, তিনি রাগের বশে স্ত্রী রানীকে হত্যা করেছেন। সেই সময় মা জোসনা বেগম ছেলে মেহেদীকে জানিয়ে দেন যে, ‘তুই যদি আমার ছেলে হয়ে থাকিস তাহলে থানায় গিয়ে এ খুনের কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করবি।’মায়ের কথামত বেলা ১১টার দিকে মেহেদী ফতুল্লা মডেল থানায় চলে যান। থানায় গিয়ে তিনি প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে থানা কমপাউন্ডে এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এতে মেহেদীর গতিবিধি থানায় কর্তব্যরতদের সন্দেহ হয় এবং মেহেদীর কাছে থানায় আসার কারণ জানতে চান দায়িত্বরতরা।মেহেদী জানান, ওসির কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেবেন তিনি। পরে ওসির রুমে মেহেদীকে নিয়ে গেলে তিনি ওসিকে বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি। আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’ঘটনা সত্যতা যাচাইয়ে পুলিশ পাঠিয়ে খুনের সত্যতা সঠিক হওয়ার পর আত্মসমপণ মেহেদীকে থানায় হাজতে আটক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।ঘটনাটি মর্মান্তিক উল্লেখ করে ওসি জানান, রাগের বশে মেহেদী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে অনুশোচনা ও তার মায়ের সৎ পরামর্শে মেহেদী থানায় এসে আত্মসমপর্ণ করেছেন। প্রত্যেকটি বাবা মায়ের মেহেদীর মায়ের মত হওয়া উচিত। পাশাপাশি আমাদের সকলকে রাগের সময় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Close