জাতীয়

করোনা ঝুঁকি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর

করোনা ঝুঁকি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর

 

ইমরান হোসেন রমজান,ঢাকা:-

 

রাজধানী কামরাঙ্গীরচর করোনা ভাইরাসের দিকে আরেক পা এগিয়ে গেলো বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঢাকার বেশির ভাগ গার্মেন্টস কর্মী  এখানেরই বাসিন্দা, এরমধ্যেই  কর্মস্থলে যোগ দিতে তারা গ্রামে ছেড়ে গন্তব্যস্থলে এসেছে,  ফলে করোনার ঝঁকিতে পরতে পারে এলাকার মানুষ এমনটিই মনে করছেন স্থানীয়রা।

 

কামরাঙ্গীরচরের নিকটতম থানা হাজারীবাগ   ও মোহাম্মদপুরে ইতোমধ্যে ২ জন করে মোট ৪ জন করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় হলেও কোনো রকমের সচেতনতা তৈরী করতে পারেনি চরের বাসিন্দাদের। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে স্থানীয়দের মনে।

 

কামরাঙ্গীরচর করোনার জন্যে কেনো এতো ঝুঁকিপূর্ণঃ

নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া বেশির ভাগ মানুষের বাস এই কামরাঙ্গীরচরে। ফলে শিক্ষার হার যেমন কম তেমনি সচেতন নাগরিকের বড় অভাব এই চরে।

 

এই চরের প্রবেশ মুখেই আছে ময়লার বিশাল ভাগার। তাছাড়া মানুষ জায়গায় জায়গায় ময়লা, যেখানে সেখানে কফ -থুথু ফেলে পরিবেশকে এখনো দূষিত করে তুলছে, এখনো মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে অর্ধেকের বেশি মানুষ।

 

এরমধ্যে করোনার প্রকট ঠেকাতে ৫৬ নং ওয়ার্ড কাউন্ডিলর  মোহাম্মদ হোসেন ও পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও বাস্তবে তা কোনো কাজেই আসছে না।

কাউন্সিলের পক্ষ থেকে প্রতিদিন দোকান বন্ধ ও লোকজনকে বাসায় অবস্থানের জন্যে  মাইকিং করা হলেও  তাদের বাহিরে বের হওয়া কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

পুলিশ বা কাউন্সিলের লোকজন এলে জনগন দৌড়ে পালালেও  প্রশাসনের লোকজন চলে গেলে আবার ও এসে আড্ডায় ভারী করে তুলে দোকানপাট, রাস্তাঘাট।

 

দোকান পাটের অবস্থাঃ

সরকার ইতোমধ্যে জরুরী প্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া সব দোকান বন্ধ রাখতে বললেও কোথাও গোপনে,  কোথাও বা প্রকাশ্যে চা পানের দোকান খুলে বসছে দোকানীরা। আর সেখানেই এক কাপেই চা পান করছেন অনেকেই, সাথে এক বিড়িতেই ফুক দিচ্ছেন অনেকেই যা করোনা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুন।

 

এরমধ্যে আজ থেকে কামরাঙ্গীরচরে সবধরনের দোকান( মেডিসিন  ব্যতিত) বিকেল ৪ টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন কাউন্সিল মোহাম্মদ হোসেন।

 

রাস্তা ঘাটের অবস্থাঃ

কামরাঙ্গীরচরের প্রধান সড়কে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল থাকায়  সেখানে লোকসমাগন কিছুকম। তবে অলিগলি সব সময় লোক জামায়েত থাকে সবচেয়ে বেশে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল এলেই কোনো বাঁধা তাদের ঘরে আটকিয়ে রাখতে পারে না, আবাল বৃদ্ধা সবাই নেমে পরে রাস্তায়।

অনেকেই রাস্তায় দাড়িয়ে জটলা তৈরী করে লুডু খেলার আসর জমিয়ে বসে, কখনো বা জমায়েত বেধে ঝগড়া বা চোর ধরা, খলিফাঘাট কাজীবাড়ির রোডের দৈনন্দিন চিত্র এটি।

একই চিত্র দেখা যায় রনী মার্কেট, জান্নাতবাগ, চাঁদ মসজিদ।

 

মসজিদের অবস্থাঃ

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা আগের চেয়ে বহুগুনে বেড়েছে। তবে মসজিদগুলেতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে অনেকেই সর্দি কাশি নিয়ে নামাযে উপস্থিত  হতে দেখা যায়। তবে খবর নিয়ে জানা যায় মসজিদগুলো ইমান মুয়াজ্জিন মুসল্লিদের বাসায় সুন্নত পড়ে ফরজ নামাযের ৫ মিনিট আগে মসজিদে আসার অনুরোধ করেন, সাথে কারো গা ঘেষে না দাড়াতেও  অনুরোধ করেন। ইমান -মুয়াজ্জিনের সাথে সর্তক অবস্থানের রয়েছে মসজিদের মুতওল্লীগনও।

 

চিকিৎসা ব্যবস্থাঃ

কামরাঙ্গীরচরে করোনা রোগে আক্রান্ত হলে ৩১ শয্যাবিশিষ্টি হাসপাতে চিকিৎসা হবে, কারো জ্বর,কাশি,গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট থাকলে দ্রুত এই নাম্বারে 01726321189 অথবা  আইইডিসিআরের  নাম্বারেও যোগাযোগ করা যাবে।

 

স্থানীয়রা বলেছেন এখনি যথাযথ উদ্যোগ না নিলে এই চরকে করোনা ঝুঁকি থেকে বাঁচানো সম্ভব নয়, তাড়াছা এই চরে কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে মরণঘাতী এই ভাইরাস।

তাই অনেকে মন করছেন লক ডাউন নিশ্চত ও কাউন্সিল হোসেন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তা বাস্তবায় করতে পারলেই অনেকটাই নিরাপদ রাখা যাবে এই কামরাঙ্গীরচরকে।

Close